বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে স্থায়ীভাবে ভারতে আসা প্রায় ২ লক্ষ হিন্দু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দিতে চলেছে ভারত সরকার। আগামী ১৫ আগস্ট দেশটির স্বাধীনতা দিবসের দিন এই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।
যে সমস্ত রাজ্যগুলিতে হিন্দু শরণার্থীরা আশ্রয় নিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে মন্ত্রালয়ের কর্মকর্তারা সেই রাজ্যগুলির প্রশাসনের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে কথা বলাও শুরু করেছেন। আগামী ১৫ আগষ্টের মধ্যেই হিন্দু শরণার্থীদের ভারতের নাগরিকত্ব এবং দীর্ঘ মেয়াদী ভিসার দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথাও বলা হয়েছে।
গুজরাট, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র ও দিল্লিতে শরণার্থীদের নিয়ে এক মাসব্যাপী একটি শিবিরও সংগঠিত হয়েছে। নাগরিকত্ব ছাড়াও এই হিন্দু শরণার্থীদের ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড ও আধার কার্ডও দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, এই মানুষেরা যাতে আগামীদিনে কর্মসংস্থানের সুবিধা পায় সেদিকটিও বিবেচনা করা হচ্ছে। এই ইস্যুতে ভারতের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উভয়ই একযোগে কাজ করবে বলে জানা গিয়েছে।
এই ইস্যুটিকে সামনে রেখেই ২০১৪ সালে লোকসভা প্রচারণায নেমেছিল বিজেপি। দেশটির তৎকালীন বিজেপি প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিলেন ভারতে আগত হিন্দুদের শরণার্থীদের সব সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে যে হিন্দু শরণার্থীরা ভারতে চলে আসছেন তাদের কাছে ভারতই ‘স্বাভাবিক আবাসস্থল’ বলে বর্ণনা করেছিলেন মোদি।
প্রসঙ্গত গত কয়েকবছর ধরেই বাংলাদেশ, পাকিস্তানের মতো দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠে আসছে। মৌলবাদীদের হাতে বহু হিন্দুদের খুনও হতে হয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই সেদেশের সংখ্যালঘুরা ভারতের পথে পা বাড়িয়েছেন। ভারতের ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন মেনে এই হিন্দুদেরই স্বীকৃতি দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
নাগরিকত্ব দেওয়া প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রালয়ের কর্মকর্তাদের মতে এটা কেন্দ্রীয় সরকারের কোন এজেন্ডা নয়, মানবিকতার দৃষ্টিকোণ থেকেই বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। আমরা চাই না হিন্দু শরণার্থীরা নিজেদেরকে অসুরক্ষিত ও দম বন্ধকর পরিস্থিতির শিকার মনে করুক। প্রক্রিয়াটি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দেশের নাগরিকত্ব আইন, পাসপোর্ট আইন, বিদেশি নাগরিক আইন সংশোধন করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আর তা হলেই এই মানুষগুলিকে আর অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসাবে আখ্যা দেওয়া যাবে না।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৮ জুন, ২০১৬/ আফরোজ