ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে উত্তেজনার পারদ ক্রমে বাড়লেও বাড়ি ছাড়তে নারাজ সীমান্তবর্তী মানুষ। উরি সেনা ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলার পর নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সীমান্তবাসীদের নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে নিয়ে যাচ্ছে ভারত সরকার। জম্মুতেই এখনও পর্যন্ত ১০০টি জায়গা চিহ্নিত হয়েছে। যেখানে সীমান্তবাসীদের অস্থায়ী ক্যাম্পের রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কিন্তু ক্যাম্প নয়, নিজেদের বাড়িতেই থাকতে চান সীমান্তবর্তী গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দা। আর যারা এর মধ্যেই আতঙ্কে ঘর-বাড়ি ছেড়ে অন্যত্রে আশ্রয় নিয়েছেন, তাদেরও অনেকেই নিজের পুরনো জায়গাতেই ফিরতে চাইছেন। খবর সংবাদ প্রতিদিনের।
এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সুনীল তাকিয়া নামের সন্দেহজনক এক ব্যক্তিকে আটক করল ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা সুনীলকে রবিবার রাতেই আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
শুধু নিজের বাড়ি নয়, কোন আত্মীয়র বাড়িতেও থাকতে পছন্দ করছেন সীমান্তবাসীরা। কাথুরা জেলার ডেপুটি কমিশনার রমেশ কুমার জানিয়েছেন, জেলার মাত্র তিনটি গ্রামের প্রায় ২৫০ জনের মতো মানুষ ক্যাম্পে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন। কিন্তু বাকি সকলেই নিজের বাড়িতেই ফিরে গেছেন। অনেকে আবার আত্মীয়র বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে তো এই আতঙ্কের পরিবেশের মধ্যেও নিজের বাড়িতেই থেকে গেছেন। এই জেলায় ৩৪টি অস্থায়ী ক্যাম্পের মধ্যে মাত্র ২০টিতে স্থানীয় বাসিন্দারা রয়েছেন।
একই অবস্থা সীমান্তবর্তী সাম্বা জেলাতেও। দু’দেশের গুলির লড়াইয়ে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২৫ হাজার গ্রামবাসী। এখানেও অস্থায়ী ক্যাম্পগুলোর মধ্যে মাত্র পাঁচটিতে স্থানীয় বাসিন্দারা রয়েছেন। যদিও এখানে তেমনভাবে উত্তেজনা নেই। সাম্বার ডিসি জানিয়েছেন, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হয়েছে। তবে, পুরো সেক্টরের ক্যাম্পগুলি থেকে এর মধ্যেই দেড় হাজারের মতো গ্রামবাসী বাড়ি ফিরে গেছেন। অনেকে আবার রাতে ক্যাম্পে থাকছেন৷ খুব ভোরে সেখান থেকে বাড়ি ফিরে গৃহপালিত পশুদের দেখাশোনা করছেন৷ স্থানীয় প্রশাসন মনে করছে, প্রধানত গৃহপালিত পশুদের দেখভালের জন্যই বাড়ি ফিরে যেতে চাইছেন সীমান্তের আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা৷
শুধু যে বাড়ি ফিরে যেতে চাইছেন তা নয়, গুলি ও গ্রেনেডের ভয়-আতঙ্কও তাদের মধ্যে রয়েছে। সেই কারণে তো প্রাণ বাঁচানোর জন্য এবার সীমান্তবাসীরা গ্রামে বাঙ্কার তৈরির দাবি জানালেন। আখনুরের বাসিন্দা দিশা দেবী জানিয়েছেন, যখন সীমান্তে গোলা-গুলি চলে, তখন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না। সরকার আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, নিরাপত্তার জন্য বাঙ্কার তৈরি করে দেবে। কিন্তু এখনও তার দেখা পাওয়া যায়নি। তিনি একইসঙ্গে আশাবাদী এবার হয়তো তাদের দাবি মেনে বাঙ্কার করে দেবে।
বিডি-প্রতিদিন/০৪ অক্টোবর, ২০১৬/মাহবুব