গত মাসের ২৯ তারিখ নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) পেরিয়ে পাকিস্তান শাসিত কাশ্মীরে গিয়ে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। এর পরই কংগ্রেস, আম আদমি পার্টিসহ (আপ) বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকার প্রশংসা করা হয়। এক সপ্তাহও হয়নি, এবার উল্টো গাইতে শুরু করল কেজরিওয়াল দল আপ। আর তাতে তাল মেলালো দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসও।
গত সপ্তাহে সেনা অভিযানের পরই সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে তথ্য দেওয়া হয়। তখন পাকিস্তান ইস্যুতে কেন্দ্রের পাশেই দাঁড়ায় কংগ্রেস। কিন্তু পাকিস্তান সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের কথা লাগাতার অস্বীকার করতে থাকায় এখন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক মহলের একাংশের।
এরপর সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে একটি ভিডিও বার্তায় আপ প্রধান ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল সেনা অভিযানের প্রমাণ চেয়ে ছবি প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন মোদি সরকারের কাছে। তিন মিনিটের ভিডিও বার্তায় কেজরিওয়াল বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম যে পাকিস্তান বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের নিয়ে আন্তর্জাতিক সীমান্তে পরিদর্শন করাচ্ছে। পাকিস্তান সরকার তাদের বোঝাতে চাইছে যে ভারতের সেনা অভিযান বলে যেটা চালাচ্ছে তা সব মিথ্যা। এই প্রতিবেদন দেখে আমার রক্ত টগবগ করে ফুটছে’। সরকারের উচিত সেনা অভিযানের ছবি সামনে এনে পাকিস্তানের দাবিকে মিথ্যে প্রমাণিত করা। তবে মোদির প্রশংসাও করেন কেজরিওয়াল। তিনি বলেন, ‘মোদির সঙ্গে আমার একশতটি ক্ষেত্রে মতপাথ্যর্ক থাকতে পারে কিন্তু পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দিতে তিনি যে পদক্ষেপ নিয়েছে তাকে আমি স্যালুট জানাচ্ছি’।
কেজরিওয়ালের ওই বার্তার পরই মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ কেজরিওয়ালকে তোপ দেগে বলেন, ‘তিনি (কেজরিওয়াল) জানিয়েছেন সেনা অভিযান নিয়ে ভারত সরকারের প্রমাণ দেওয়া উচিত। আমি তাকে বলতে চাই, তিনি কি ভারতীয় সেনাকে বিশ্বাস করেন না? আজ যখন গোটা ভারত সেনার পাশে রয়েছে তখন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছেন। এর থেকে দু:খজনক ও দুর্ভাগ্যজনক আর কিছু হতে পারে না’।
কেজরিরর পথে হেঁটে কংগ্রেসের নেতা সঞ্জয় নিরুপমের দাবি, যাবতীয় ধোঁয়াশা কাটাতে প্রমাণ প্রকাশ্যে আনুক কেন্দ্র।
এদিন ট্যুইট করে নিরুপম বলেন, প্রত্যেক ভারত বাসীই চায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান হোক কিন্তু রাজনৈতিক স্বার্থের কারণে বিজেপি যেন এটাকে নিয়ে মিথ্যা প্রচার না করে’। এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, আমি বলছি না যে সেনা অভিযানের পুরো ভিডিও প্রকাশ করা হোক, আমি সেটা চাইও না...দেশের জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে সেটা না করাই উচিত...কিন্তু অভিযানের কোন প্রমাণ অবশ্যই দেখানো উচিত’।
বিডি-প্রতিদিন/০৪ অক্টোবর, ২০১৬/মাহবুব