নদী কূটনীতিতে নতুন করে চাপে পাকিস্তান। ভারতকে চাপে ফেলতে চীনের তিব্বতের ব্রহ্মপুত্রের একটি উপনদীর পানি আটকাতে শুরু করেছে পাকিস্তান। কিন্তু নয়াদিল্লির হাতে অন্য অস্ত্রও থাকতে পারে, সে কথা সম্ভবত মাথায় ছিল না পাক কূটনীতিকদের। তাই আফগানিস্তান থেকে যে সব নদী পাকিস্তানে ঢুকেছে, সেগুলির প্রবাহ নিয়ে এ বার চিন্তায় পড়তে হল তাদেরকে।
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে যে মূল তিনটি নদী রয়েছে, সেই তিনটি নদীর উপর বাঁধ বা ব্যারেজ তৈরির জন্য ভারতের দ্বারস্থ হয়েছেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি। ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের পশ্চিমাংশে হেরাট প্রদেশে হরি নদীর উপর সালমা বাঁধ তৈরি করেছে ভারত। কিন্তু আফগানিস্তান চায় দেশের পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি নদীতেও ভারত এই রকম বাঁধ তৈরি করুক। তাতে সেচ ও বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিকাঠামো গড়ে তুলে পিছিয়ে পড়া পূর্ব আফগানিস্তানের উন্নতি যেমন হবে, তেমনই ওই অঞ্চলে সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনগুলির উপদ্রবও কমানো যাবে। আফগানিস্তানের এই প্রস্তাব এ বার খুব গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে শুরু করেছে ভারত। স্বাভাবিক ভাবেই জল আটকে যাওয়ার আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেছে পাকিস্তান।
কাবুল হল আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় নদী। বাকি দু’টি অপেক্ষাকৃত ছোট— কুনার ও চিত্রাল। এই কুনার এবং চিত্রাল কাবুল নদীতেই মিশেছে। কাবুল পাকিস্তানে ঢোকার পর সিন্ধুর সঙ্গে মিশেছে। কাবুল, কুনার ও চিত্রালের উপরেই তিনটি বাঁধ তৈরির বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে ভারত সরকার। আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানি গত মাসেই ভারত সফরে এসেছিলেন। তখনই তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ওই তিনটি নদীর উপর বাঁধ তৈরিতে সহায়তা করার অনুরোধ করেন। এ বার সে পথেই এগোতে পারে ভারত।
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলের নদীগুলির ওপর ভারত যদি একাধিক বাঁধ তৈরি করে, তা হলে পূর্বাঞ্চলের মতো পশ্চিমাঞ্চল নিয়েও চিন্তায় থাকতে হবে পাকিস্তানকে। কারণ অপ্রীতিকর পরিস্থিতিতে পূর্ব এবং পশ্চিম, দু’প্রান্ত থেকেই পাকিস্তানগামী একাধিক নদীর প্রবাহ আটকে দেওয়ার সুযোগ থাকবে ভারতের সামনে।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৫ অক্টোবর, ২০১৬/ সালাহ উদ্দীন