গত ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনকে হারিয়ে ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দলের মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকে জনমত জরিপে এগিয়ে থাকা হিলারি ক্লিনটন এমন পরাজয় ভাবতেও পারেননি। কিন্তু তারপর? হিলারি বলেছেন, তিনি একটি বই হাতে নিয়ে ঘরেই থেকে যেতে চেয়েছিলেন। দেখা যাক, এর আগের নির্বাচনে পরাজিত হয়ে ডাকসাইটে সব প্রার্থীরা নির্বাচনের পর কি করেছিলেন...
মিট রমনি:
যুক্তরাষ্ট্রে ২০১২ সালের নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টি থেকে প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়ন পেয়েছিলেন ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক মিট রমনি। তিনি বর্তমান ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কাছে পরাজিত হন। এরপর তিনি খুব একটা উচ্চবাচ্য করেননি। কিছুটা চুপচাপ ছিলেন এবং পরে তিনি তার ব্যবসায় ফিরে যান। ম্যারিয়ট ইন্টারন্যাশনালে যোগ দান করেন একজন পরিচালক হিসেবে।
তবে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় তিনি আবার রাজনীতিতে সরব হয়ে উঠেন। কাজ করেন রিপাবলিকান দলের ক্যাম্পেইনার এবং অর্থ সংগ্রাহক হিসেবে।
জন কেরি:
২০০৪ সালে তিনি রিপাবলিকান দলের প্রার্থী জর্জ বুশের কাছে খুব সামান্য ব্যবধানে হেরে যান। এরপর সেনেটর হিসেবেই থেকে যান তিনি। পরে তিনি ২০১৩ সালে হিলারি ক্লিনটনের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বর্তমানে এই পদেই বহাল আছেন।
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি
আল গোর:
প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটেনর সময় তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০০ সালের নির্বাচনে তিনি হেরে যান জর্জ বুশের কাছে। সেসময় ফ্লোরিডার ভোট আদালতের আদেশে পুনরায় গণনা করতে হয়েছিল। এই সিদ্ধান্তে ফলে জর্জ বুশ ফ্লোরিডাতে মাত্র ৫৩৭ ভোটে জয়লাভ করেন আর সারাদেশে মাত্র একটি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট বেশি পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত পান।
পরে তিনি পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে শুরু করেন। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকানোর আন্দোলনে তার ভূমিকা উল্লেখ করার মতো। এবিষয়ে তিনি একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন। ২০০৭ সালে পান নোবেল পুরস্কার।
বব ডোল:
১৯৯৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিল ক্লিনটনের কাছে পরাজিত হন বব ডোল। এরপর তিনি ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি আইন প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন চাকরি করেন। পরে লেখালেখি এবং টেলিভিশন অনুষ্ঠান নিয়েও তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
ভায়াগ্রা, ভিসা, ডানকিন ডোনাট এবং পেপসি কোলার মতো পণ্যের বাণিজ্যে একজন মুখপাত্র হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। ল্যারি কিং লাইভ, ডেইলি শো, সিক্সটি মিনিটের মতো টিভি অনুষ্ঠানে তিনি প্রায়ই হাজির হতেন। তিনি বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। তার একটি বই মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মুখ থেকে শোনা কৌতুকের ওপর।
হেনরি ক্লে (১৭৭৭-১৮৫২): খুব সহজেই হাল ছেড়ে দেওয়ার পাত্র ছিলেন না হেনরি ক্লে। তিনি একরকম পেশাদার প্রার্থী হয়ে উঠেছিলেন। তিনবার নির্বাচন করে তিনবারই হেরেছেন। শুধু তাই নয়, নিজের দল থেকেও তিনি দুবার মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। তার প্রেসিডেন্ট হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। তবে হাউজের স্পিকার এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
অ্যারন বার (১৭৫৬-১৮৩৬): যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বর্ণিল এক প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী। ১৮০০ সালের নির্বাচনে তিনি টমাস জেফারসনের কাছে হেরে যান। তবে, সেসময়, যিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেতেন তিনি নির্বাচিত হতেন ভাইস প্রেসিডেন্ট। তাই পরের চার বছর তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেই দায়িত্ব পালন করেছেন।
অ্যারন বার, নীল পোশাক পরিহিত
তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়- তিনি আরেকটি প্রজাতন্ত্র গঠনের চেষ্টা করছিলেন। তার বিচার হয়। তিনি ইউরোপে পালিয়ে যান। পরে ফিরে যান নিউইয়র্কের আইনি পেশায়। সূত্র: বিবিসি
বিডি-প্রতিদিন/২০ নভেম্বর, ২০১৬/মাহবুব