ঘানায় শবযাত্রায় নতুন ট্রেন্ড আনল। সাধারণত শেষকৃত্য অনুষ্ঠান বা মৃতদের বিদায় জানানো সবার কাছেই শোকের একটি ব্যাপার। এ সময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। কিন্তু ঘানায় নতুন একটি ধারা চালু হয়েছে, যার মাধ্যমে মৃতদের বিদায় জানানো হয় নাচের মাধ্যমে। ফলে পুরো শেষকৃত্য অনুষ্ঠানেও ছড়িয়ে পড়ে অনেকটা স্ফূর্তির ছায়া।
টাকার বিনিময়ে একদল নৃত্যশিল্পী ভাড়া করেন পরিবারের সদস্যরা। তারা কফিন ঘাড়ে নিয়ে, ড্রাম বাজনার সঙ্গে নাচতে নাচতে কবরস্থানের দিকে এগোতে থাকেন। তাদের সঙ্গে যোগ দেন পরিবারের সদস্যরাও। ঘানায় এখন এ রকম শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।
এই নৃত্যদলের উদ্যোক্তা বেনজামিন আইডো বলছেন, আমাদের কাছে যখন গ্রাহকরা আসেন, আমরা প্রথমে জিজ্ঞেস করি, আপনি কি কিছুটা আনুষ্ঠানিকতা চান, নাকি অনানুষ্ঠানিক ধাঁচের অনুষ্ঠান চান? সেই অনুযায়ী আমাদের দলের সদস্যরা আচরণ করে।
কালো স্যুট, কালো টুপি, জুতা আর সাদা শার্ট পরে ছয়জন একেকটি কফিন বহন করেন আর নাচতে থাকেন। দলের মেয়েদের পরনে থাকে সাদা পোশাক। পেছনে ঢোল তবলা নিয়ে থাকেন তাদের সহযোগীরা। অনেক সময় শবযাত্রায় আগতরাও তাদের সঙ্গে অংশ নেন। তাহলে কারা আর কেন এ রকম অনুষ্ঠানের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন ঘানার বাসিন্দারা?
সদ্য মারা যাওয়া একজনের কন্যা এলিজাবেথ আনান বলছিলেন, যখন আপনার ভালোবাসার একজন মানুষকে তার শেষ ঠিকানায় নিয়ে যাওয়া হয়, তখন এই মানুষগুলো নাচগান করে। তাই আমি ঠিক করলাম, আমার মাকে তাহলে একটি ড্যান্সিং ট্রিপ বা নাচগানের মাধ্যমেই বিদায় জানানো যাক।
নতুন ধরনের এই উদ্যোগের মাধ্যমে অন্তত একহাজারের বেশি তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন বেনজামিন। তিনি বলছেন, এর মাধ্যমে তিনি দেশের বেকারত্ব কমিয়ে আনতে চান। যদিও এ জন্য দলের সদস্যদের পোশাক আশাকের পেছনে তাকে অনেক বিনিয়োগও করতে হয়েছে। তিনি বলছেন, প্রতিদিনই তারা এরকম অনেক অনুরোধ পাচ্ছেন। ঘানায় শেষকৃত্যের মতো অনুষ্ঠান সামাজিকভাবে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। আর এখন নতুন ধরনের এই শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে ঘানাবাসীর।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার