ভারতের চার বিদ্রোহী বিচারপতি ক্যুরিয়েন জোসেফ, জে.চেলারামেশ্বর, রঞ্জন গগৈ এবং দমন লোকুর সোমবার (দেশটিতে সপ্তাহের প্রথম দিন) আদালতে কাজে যোগ দিয়েছেন।
বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মনন মিশ্র-ও সংবাদ সম্মেলন করে জানান, সঙ্কট মেটানোর জন্য আমরা শীর্ষ আদালতের ১৫ জন বিচারপতির সাথে সাক্ষাৎ করেছিলাম, তাঁরা আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন সব সমস্যা মিটে গেছে। আদালতের সব কক্ষেই কাজ চলছে। আমরা প্রধান বিচারপতি ও অন্য চার সিনিয়র বিচারপতির প্রতি খুবই কৃতজ্ঞ যে তাঁরা নিজেদের প্রচেষ্টায় সমস্যার সমাধান করেছেন।
প্রধান বিচারপতির সমালোচনা করেছিলেন ওই চার সিনিয়র বিচারপতি। তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে দীপক মিশ্র বলেন, পদক্ষেপ নেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই এবং তাঁরা প্রত্যেকেই সৎ ও ন্যায়পরায়ণ মানুষ।
বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে খবর প্রধান বিচারপতির সঙ্গে নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য মিটিয়ে ফেলতে সোমবার সকালে আদালত শুরুর আগেই আদালতের লনে একটি অনানুষ্ঠানিক (ইনফরমাল) কথাবার্তা সেরে নেন বিদ্রোহী চার সিনিয়র বিচারপতি, ছিলেন অন্য বিচাপরতিরাও। সেখানেই সমস্য মেটানোর ইঙ্গিত দেন দেশটির প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র-ও। প্রধান বিচারপতি মুখে কিছু না বললেও মুচকি হাসি দেন। তাতেই বরফ গলার ইঙ্গিত মেলে। অন্য দিনের চেয়ে ১০ মিনিট (সকাল ১০.৪০) দেরিতে আদালতের কাজ শুরু হয়।
দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল কে.কে.বেণুগোপালও জানান, সকালেই একটি অনানুষ্ঠানিক মিটিং হয়েছে, এখন সবকিছু ঠিক হয়ে গিয়েছে। আদালতেও কাজকর্ম শুরু হয়েছে।
চার সিনিয়র বিচারপতির মন্তব্যকে ‘চায়ের কাপে তুফান’ ছিল বলেও এদিন মন্তব্য করেনে বেণুগোপাল।
শীর্ষ আদালতের সমস্যা মেটার আশ্বাস পাওয়া গিয়েছিল রবিবার সন্ধ্যায়। সংকট মেটাতে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের সঙ্গে দেখা করে মনন মিশ্র’র নেতৃত্বাধীন বার কাউন্সিলের সাত সদস্যের এক প্রতিনিধি দল। প্রায় ৫০ মিনিটের ওই বৈঠকেই প্রধান বিচারপতির তরফে শিগগির সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে আশ্বাস দেওয়া হয়।
তারও আগে ওই প্রতিনিধি দলের তরফে শীর্ষ আদালতের চার বিদ্রোহী সিনিয়র বিচারপতির মধ্যে ক্যুরিয়েন জোসেফ, জে.চেলারামেশ্বর এবং মদন লোকুর-এই তিনজনের সাথেও বৈঠক করা হয়।এর পাশাপাশি বার কাউন্সিলের সভাপতি বিকাশ সিং-ও সাক্ষাৎ করেন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের সঙ্গে।
উল্লেখ্য গত ১২ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে দেশের বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন শীর্ষ আদালতের চার সিনিয়র বিচারপতি। তাঁদের অভিযোগ ছিল বর্তমান বিচার ব্যবস্থায় অনেক ফাঁক রয়েছে। গোটা ঘটনার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করান প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রকে। কোন যেক্তিকতা ছাড়াই প্রধান বিচারপতি গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলি তাঁর পছন্দের বেঞ্চকে দিয়ে দিচ্ছেন বলেও সেদিন অভিযোগ তোলেন ওই চার বিচারপতি। বিদ্রোহী বিচারপতিদের অভিযোগ প্রধান বিচারপতি যেভাবে আদালত চালাচ্ছেন তা ভারতের গণতন্ত্রকে হুমকির মুখে ফেলে দেবে।
বিডি প্রতিদিন/১৫ জানুয়ারি, ২০১৮/ফারজানা