ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন কৃতিত্ব অর্জন করলেন দেশটির অঙ্গরাজ্য সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী পবন চামলিং (৬৮)। পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত জ্যোতি বসুকে ছাপিয়ে এবার ভারতের সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী মুখ্যমন্ত্রীর রেকর্ড গড়লেন পবন চামলিং।
গতকাল ২৮ এপ্রিল (মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে জ্যোতি বসুর ছিল ৮৩৫৮ দিন) পবন এই রেকর্ডটি স্পর্শ করেন এবং আজ রবিবার নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করলেন তিনি। আগামী ২০১৯ সালে রাজ্যটিতে বিধানসভার নির্বাচন, ফলে আগামী আরও এক বছর এই পদে থাকবেন পবন, সেক্ষেত্রে তিনি অন্যদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে যাবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
ট্যুইট করে পবন চামলিং নিজেই জানান ‘যেহেতু আমি একটি ব্যক্তিগত মাইলস্টোন অতিক্রম করছি, তাই যারা গত দুই দশক ধরে এই কৃতিত্বের সঙ্গী ছিলেন আমি তাদের সকলকে স্মরণ করছি। সবার প্রথমে এই রেকর্ড-এর জন্য সিকিমের মানুষকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। সিকিমের মানুষের বিশ্বাস, আস্থা এবং সমর্থন ছাড়া এই রেকর্ড গড়া সম্ভব হত না’।
জ্যোতি বসুকে স্মরণ করে সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী জানান ‘আমি প্রয়াত জ্যোতি বসু জি’কেও আমার শ্রদ্ধা জানাই, তাঁর মতো একজন মহান নেতাকে আমার সর্বোচ্চ সম্মান জানাই এবং দীর্ঘস্থায়ী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে যাঁর রেকর্ড ছিল কিন্তু সৌভাগ্যবশত আমি রেকর্ডটি ছাপিয়ে যাচ্ছি। আমি আমার দায়িত্ব থেকে কখনও একটা দিন ছুটি নিই নি বা কখনও ব্যক্তিগত অঙ্গীকার থেকে সরে যাইনি’।
উল্লেখ্য ১৯৯৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পবনের নেতৃত্বাধীন দল সিকিম ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এসডিএফ) রাজ্যটির ক্ষমতায় আসে। ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন পবন। সেই থেকে পরপর পাঁচবার তাঁর দল নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে আসছে।
পবনের আগে জ্যোতি বসুই ছিলেন ভারতের দীর্ঘতম মেয়াদের মুখ্যমন্ত্রী। ১৯৭৭ সালের ২১ জুন থেকে ২০০০ সালের ৫ নভেম্বর পর্যন্ত (৮৩৫৮ দিন) মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছিলেন জ্যোতি বসু। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি তাঁর পঞ্চম বারের মেয়াদ সম্পূর্ণ করে যেতে পারেননি। ২০০৬ সালের ৬ নভেম্বর দলেরই কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য’এর হাতে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব অর্পণ করে যান জ্যোতি বসু। ২০১০ সালের ১৭ জানুয়ারি ৯৫ বছর বয়সে জ্যোতি বসু পরলোকগমন করেন।
১৯৭৩ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন পবন। ১৯৮৫ সালে প্রথমবারের জন্য সিকিম বিধানসভায় নির্বাচিত হন।
গত ২০১৪ সালের বিধানসভার নির্বাচনে রাজ্যের ৩২ টি আসনের মধ্যে ২২ টি আসন দখল করে এসডিএফ, যেখানে সিকিম ক্রান্তিকারি মোর্চা (এসকেএম) পায় ১০ টি আসন। কিন্তু পরবর্তীকালে দল পরিবর্তনের পর বর্তমানে এসকেএম’এর বিধায়ক মাত্র ২ জন অন্যদিকে এসডিএফ’এর বিধায়ক সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৯ জন। ১ জন আছেন স্বতন্ত্র পার্টির বিধায়ক।
বিডি প্রতিদিন/২৯ এপ্রিল ২০১৮/হিমেল