ভারত তথা উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক, লেখক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক কুলদীপ নায়ার আর নেই।
বৃহস্পতিবার ভোরে দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
তার বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর। তিনি রেখে গেছেন স্ত্রী ও দুই সন্তান। বৃহস্পতিবার বিকালেই দিল্লির লোধি রোডের শ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
কুলদীপের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রমুখ।
এক টুইট বার্তায় মোদি জানান, আমাদের সময়ের বিদগ্ধ একজন পণ্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। অত্যন্ত নির্ভীক ও স্পষ্টভাষী মানুষ ছিলেন তিনি। দেশে জরুরি অবস্থার সময় তার দৃঢ় অবস্থান, জনগণের সেবা ও নতুন দেশ গঠনে তার ভূমিকা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তার মৃত্যুতে আমার গভীরভাবে শোকাহত। তার পরিবারকে আমার সমবেদনা।
১৯২৩ সালে ১৪ অাগস্ট অবিভক্ত পাঞ্জাবের শিয়ালকোটে জন্মগ্রহণ করেন কুলদীপ নায়ার। লাহোরের পূর্বতন খ্রিস্টান কলেজ থেকে বিএ অনার্স এবং লাহোর কলেজ থেকে আইনে স্নাতক হন। পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন মেডিল স্কুল অব জার্নালিজমে ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৪৭ সালে কুলদীপ নায়ার পাকিস্তান ত্যাগ করে ভারতে এসে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন। যদিও প্রভাবশালী সাংবাদিক হিসেবে ভারত-পাকিস্তানের শান্তিপূর্ণ সু-সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি সর্বদা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।
'দৈনিক আনজাম' নামে দিল্লির একটি উর্দু সংবাদপত্র থেকে সাংবাদিকতার ক্যারিয়ার শুরু তার। পরবর্তীকালে 'দ্যা স্টেটসম্যান' পত্রিকার দিল্লি এডিশনের সম্পাদক হন। দেশে জরুরি অবস্থার (১৯৭৫-৭৭) বিরোধীতা করার জন্য গ্রেফতার বরণ করতে হয়েছিল তাকে।
মানবাধিকার কর্মী ও শান্তি প্রতিষ্ঠা স্থাপনেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল তার। ১৯৯৬ সালে জাতিসংঘে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৯০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় তাকে।
১৯৯৭ সালে ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সংসদ সদস্য হন। একাধিক ভাষায় দক্ষ ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ প্রতিদিনে নিয়মিত লিখতেন তিনি।
বিয়ন্ড দ্য লাইনস, ডিসট্যান্ট নেইবারস: এ টেল অফ দ্যা সাবকন্টিনেন্ট, ইন্ডিয়া আফটার নেহেরুসহ প্রায় ১৫টির মতো বইয়ের লেখক ছিলেন তিনি। রাজনৈতিক ভাষ্যকার হিসেবেও যথেষ্ট সুখ্যাতি ছিল তার।
বিডি প্রতিদিন/২৩ আগস্ট ২০১৮/আরাফাত