১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধ নিয়ে সিনেমা তৈরি করেছিলেন ভারতীয় বিমান বাহিনীর উইং কম্যান্ডার অভিনন্দনের বাবা সাবেক এয়ার মার্শাল এস বর্তমান। সেই সিনেমায় দেখানো হয় ভারতীয় বিমান বাহিনীর স্কোয়াড্রন লিডার বরুণ চক্রপানি ফাইটার জেট নিয়ে ঢুকে পড়েছেন পাকিস্তানি সেনা সীমানায়। শত্রুপক্ষের গুলিতে ভেঙে পড়ল তাঁর যুদ্ধবিমান। পাকিস্তানি সেনার হাতে রাওয়ালপিন্ডিতে যুদ্ধবন্দি হলেন বরুণ। অকথ্য অত্যাচার চললো তার ওপর সেনা কাস্টডিতে। সেখান থেকেই লীলার কথা মনে পড়ত খুব। লীলার সঙ্গে কাটানো সময়টা চোখে ভাসতো।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হেফাজতে বন্দি ভারতীয় বিমান বাহিনীর উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের দেশে ফেরার প্রার্থনা করতে করতে আজ অনেকেরই মনে পড়ে যাচ্ছে সিনেমার এই দৃশ্যটার কথা। অদিতি রাও হায়দারি অভিনীত, মণিরত্নমের এই দক্ষিণী সিনেমার নাম কাতরু ভেলিইদাই। আর ঘটনাচক্রে চরম কাকতালীয়কে সত্য যে, সেই সিনেমার উপদেষ্টা ছিলেন এয়ার মার্শাল এস বর্তমান। সম্পর্কে অভিনন্দনের বাবা। দু’বছর আগে সিনেমায় কাজ করার সময়ে, মতামত দেওয়ার সময়ে আন্দাজও করতে পারেননি কয়েক বছর পরে রিল লাইফের একই ঘটনা রিয়েল লাইফেও ঘটবে তাঁর ছেলের সঙ্গেও।
বুধবার সকালে অভিনন্দন পাকিস্তানে এয়ার স্ট্রাইক করতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর থেকেই আলোচনা ও তর্কের ঝড় ওঠে সব মহলে। উপজীব্য একটাই ছিল সে সব কিছুর– ফিরিয়ে আনা হোক অভিনন্দনকে। সোশ্যাল মিডিয়া উপচে পড়ে আর্তিতে। অভিনন্দনকে নিরাপদে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে সোচ্চার হন পাকিস্তানি নেটিজেনও।
বুধবার বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার সংবাদ মাধ্যমকে জানান, মিগ ২১ বিমান ধ্বংস হওয়ার পর বিমানের পাইলট অভিনন্দনের বন্দি হওয়ার কথা। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও এর কিছু পরে একটি সংবাদ সম্মেলনে বৈঠক করে জানান, “দু’দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব এভাবে বাড়তে দিলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে। তখন এটা না আমার নিয়ন্ত্রণে থাকবে, না মোদির।”
অভিনন্দনের খবর পেয়ে কাতরু ভেলিইদাই সিনেমার নায়ক কার্থি টুইট করেন, “আমি খুবই সৌভাগ্যবান যে কয়েক জন বিমান সেনাকে কাছ থেকে দেখেছি। ওঁদের মধ্যে অভিনন্দনও একজন। এটা সত্যিই খুব সম্মানের। ওঁরা অন্য দুনিয়ার মানুষ। আমি মন থেকে প্রার্থনা করছি, আমাদের সব সেনা নিরাপদে ফিরে আসুক।”
বিডি-প্রতিদিন/২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯/মাহবুব