ঘূর্ণিঝড় ফণী ভয়ঙ্কর শক্তির বিস্ফোরণ ঘটিয়ে তাণ্ডবলীলা দেখানোর অপেক্ষায় ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তম থেকে মাত্র ১৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে ধেয়ে আসা ফণী মারাত্মক ঝোড়োবাতাস ও বৃষ্টির সঙ্গে আজ শুক্রবার রাতেই প্রদেশটিতে আঘাত হানতে যাচ্ছে। উপকূলের খুব কাছাকাছি এখন অবস্থান করছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ঠ প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি।
বিশাখাপত্তম থেকে ১৫০ কিলোমিটার এবং ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের পূরী উপকূল থেকে ফণীর দূরত্ব এখন ৩০০ কিলোমিটার উল্লেখ করে ভারতীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ বিষয়ক সংস্থা স্কাইমেট ওয়েদার জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরের ১৭ দশমিক ৩ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশের কেন্দ্রে এখন অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় ফণী।
আবহাওয়াবিদদের মতে, সাধারণত ঘূর্ণিঝড় যদি উল্টোদিকে অগ্রসর হতে শুরু করে তাহলে তাদের গতি বাড়তে থাকে। তাই ফণী দ্রুতগতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
একইসঙ্গে মহাবিপদ সংকেতের সামনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে ধেয়ে আসছে ফণী। ধারণা করা হচ্ছে, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ হয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে সারারাত বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাত হানবে ফণী।
শুক্রবার দুপুরের মধ্যে ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানার পড় মারাত্মক এই ঘূর্ণিঝড় ফণী স্থলভাগ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের দিকে এগোবে। ভারতের আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, কলকাতা থেকে ফণী যে দূরুত্বে অবস্থান করছে তাতে শুক্রবার বিকেলের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে তাণ্ডব চালিয়ে বাংলাদেশে প্রবশে করবে।
ইতোমধ্যে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশায় ভারী বর্ষণ শুরু হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া ট্যুডে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তমে ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে তীব্র বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে তীব্র হাওয়া এবং বৃষ্টির জেরে অন্ধ্রপ্রদেশের রাস্তার ধারে বৈদ্যুতিক পোল ও গাছ-পালা উপড়ে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন। ঝড় ও বৃষ্টির কারণে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রাণ বাঁচাতে নিরাপদ স্থানের সন্ধানে বাড়ি-ঘর ছাড়ছেন তারা।
ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে ধেয়ে আসা ফণী মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ। উপকূলীয় এলাকাগুলোয় সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সারা দেশে নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। উপকূলীয় ১৯ জেলায় খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম