১০ বছর ধরে আফগানিস্তান, ইরান, ইরাকের আকাশ-পাতাল তোলপাড় করেও আল কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেনের খোঁজ পায়নি আমেরিকা। শেষ পর্যন্ত সেই লাদেনের খোঁজ যিনি দিয়েছিলেন, তিনিই দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দি। ‘সুবিচার’-এর আশায় জেলের মধ্যেই আমরণ অনশন শুরু করলেন পাকিস্তানের সেই চিকিৎসক শাকিল আফ্রিদি।
শাকিল ও তার পরিবারের অভিযোগ, কার্যত বিনা বিচারে তাকে জেলবন্দি করে রাখা হয়েছে।
জঙ্গিদের সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের জেলে বন্দী রয়েছেন শাকিল। লাদেনকে পাকিস্তান আশ্রয় দিয়েছে, এমন অভিযোগ আন্তর্জাতিক মহলে থাকলেও ইসলামাবাদ কখনও তা স্বীকার করেনি। কিন্তু সেই লাদেনকে পাকিস্তানের মাটিতেই খুঁজে পাওয়ায় মুখ পুড়েছিল পাকিস্তানের। তার জেরেই প্রতিহিংসামূলক আচরণ করছে পাকিস্তান সরকার। শাকিলের সাজা পুনর্বিবেচনার আর্জিও শুনানি ছাড়াই ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।
পাকিস্তানের অবিচার ও অমানবিক আচরণের প্রতিবাদেই শাকিল অনশনে বসেছেন বলে তার ভাই জামিল আফ্রিদি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ভাই এবং তার পরিবারের প্রতি যে অবিচার ও অমানবিক ব্যবহার করা হয়েছে, তার প্রতিবাদেই সে অনশনে বসেছে।’
শাকিলের আইনজীবী কামার নাদিমও আমরণ অনশনের কথা নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, ভ্যাকসিন দেওয়ার নামে একটি ভুয়া কর্মসূচি শুরু করেন শাকিল। ফলে বাড়ি বাড়ি ঢুকে সদস্যদের খোঁজ পাওয়া তার পক্ষে সহজ হয়েছিল। সেই সূত্রেই অ্যাবোটাবাদের ওই বাড়িতে লাদেনের খোঁজ পেয়েছিলেন। তারপর সেই খবর মার্কিন গোয়েন্দা সিআইএ-কে দিয়েছিলেন শাকিল।
কিন্তু সেই ঘটনার পর থেকেই জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগ তুলে তাকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের পুলিশ। বিচারে ২০১২ সালে তার ৩৩ বছর কারাদণ্ডের সাজা দেয় আদালত। যদিও শাকিল কখনওই সেই অভিযোগ মানতে নারাজ।
তিনি এবং তার পরিবারের বরাবরই অভিযোগ, লাদেনের খোঁজ দেওয়ার জন্যই প্রতিহিংসামূলক ভাবে তাকে জেলবন্দি করেছে পাকিস্তান সরকার।
২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদেই খোঁজ মেলে তার। মার্কিন সেনার অভিযানে নিহত হয় জঙ্গিনেতা লাদেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন