কিছু দেশ করোনা সংকটের সময় দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে যার মধ্যে রয়েছে টাকা ছাপানো। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক ও জাপান এমনকি তুরস্ক ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশগুলোও দেশের অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য টাকা ছাপানোর পন্থা অবলম্বন করেছে। একবার বুঝে নেওয়া যাক টাকা ছাপানোর ব্যাপারটা কি যা বিশাল জনসংখ্যার ও বিপুল অর্থনীতির দেশ ভারত করতে পারে। খবর কলকাতা ২৪x৭ এর।
টাকা ছাপানো বলতে কী বোঝায়?
১) দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরাসরি সরকারি বন্ড অথবা ঋণপত্র কিনে নিল। এর ফলে ইলেকট্রনিক্যালি হলেও অর্থনীতিতে নগদ ঢুকবে যদিও সরাসরি টাকা ছাপা হলো না। ২) কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্পোরেটদের কাছ থেকে বন্ড কিনল, বিক্রেতা তার অতরলীকৃত সম্পদ মুক্ত করে সেই তহবিল অন্যত্র কাজে লাগাবে।
কোন দেশগুলো কেমন পদক্ষেপ নিচ্ছে?
১) যুক্তরাষ্ট্রের ফেড রিজার্ভ এমন পদক্ষেপ নিয়েছিল ২০০৮ সালের আর্থিক সংকট মেটাতে। এবার করোনা সংকটেও একই টেমপ্লেট ব্যবহার করা হচ্ছে। ২) ইউরোপিয়ান সেন্ট্রাল ব্যাংক কোন একটি ইউরোজোন দেশের কাছ থেকে বন্ড কেনার ব্যাপারে সীমা তুলে দিচ্ছে। ৩) ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড তৈরি আছে সাময়িকভাবে যদি প্রয়োজন পড়ে তখন সরকারকে টাকা ধার দেওয়ার জন্য। ৪) ব্যাঙ্ক অফ জাপান সীমাহীন ভাবে সরকারি বন্ড কিনবে।
ভারত আগে কি করেছে?
১৯৮০ দশকে আরবিআই ঋণ নগদীকরণ করেছিল এবং ১৯৯০ দশকের শেষ দিকে সরকার অ্যাড হক ট্রেজারি বিল মারফত নগদীকরণ করেছিল। ১৯৯৪ সালে আরবিআই এবং সরকার মিলে নিয়ন্ত্রণ চাপিয়েছিল যেটা ১৯৯৭ সালে আস্তে আস্তে তুলে নেওয়া হয়। যদিও এটা চলছে অন্য একটা ফর্মে- আরবিআই ধরে নিচ্ছে আনসাবস্ক্রাইব পাবলিক ডেব অকশন মারফত। এফআরবিএম আইন ২০০৩, আটকে দিচ্ছে আরবিআই কে প্রাথমিক ভাবে সরকারি বন্ড কেনার ক্ষেত্রে।
ভারত কি করতে পারে?
১) অর্থনীতির প্রয়োজন বিপুল ফিসক্যাল স্টিমুলাস যা ধরা হচ্ছে জিডিপির ৯-১০ শতাংশ ব্যয় করা। যেটা পরিণত হবে ১৮-২০ লক্ষ কোটি টাকা, যেখানে বাজেটে ধরা হয়েছে ৮ লক্ষ কোটি টাকা। ২) বাজার এইরকম ধার নেওয়া সমর্থন করবে না ৩) সুদের হার বেড়ে যাবে প্রবলভাবে
৪) বেসরকারি ক্ষেত্র অথবা অন্যান্য অধমর্ণ ধার পাবে না। ৫) উচ্চ সুদের হার অথবা অন্যান্য ঋণের অভাব অর্থনৈতিক কার্যকলাপ মেরে দেবে। ৬) সুতরাং এটা আরবিআই শুধুমাত্র করতে পারবে টাকা ছাপিয়ে। কিছু অর্থনীতিবীদ জানিয়েছেন কিছু চাহিদা সৃষ্টি আবার অর্থনৈতিক ভারসাম্য বিঘ্নিত করতে পারে।
তারা যেসব আশঙ্কা করেছেন
১) উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি ২) বড় রকমের কারেন্ট একাউন্ট ঘাটতি ৩) মুদ্রার অবমূল্যায়ন ৪) বেহিসেবি খরচ অনুবপাদক সম্পদ বাড়িয়ে দিতে পারে কিন্তু রীতিমত অর্থনৈতিক সংকোচনের ফলে এমন ঘটনা ঘটতে পারে ১) চাহিদা কমে গিয়ে মুদ্রাস্ফীতির বদলে মুদ্রাসংকোচন হতে পারে ২) কারেন্ট একাউন্ট তেমন চিন্তার বিষয় হবে না যেহেতু তেমন কোন বাণিজ্য থাকবে না ৩) অপরিশোধিত তেলের দাম এত কম এবং সেটাই কিছুদিন থাকবে ৪) এই সর্তকতা পরিবেশে ঋণের ঝুঁকি কম হবে
বিডি-প্রতিদিন/শফিক