অ্যালেক্সেই নাভালনি কাণ্ডে ক্রমেই চাপ বাড়ছে রাশিয়ার উপর। বিশেষ করে প্রশ্নের মুখে পড়েছেন রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এবার মস্কোকে আরও চাপে ফেলে ছয় রুশ কর্মকর্তা ও একটি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাল ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই পদক্ষেপে পশ্চিমের সঙ্গে রাশিয়া সম্পর্ক আরও তলানিতে নিয়ে গেলো বলেই মত বিশ্লেষকদের। কারণ নিষেধাজ্ঞার জারি হওয়া ওই ছয় রুশ কর্মকর্তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে রয়েছেন। এদের মধ্যে দু’জন প্রেসিডেন্সিয়াল এগজিকিউটিভ অফিসের শীর্ষ কর্মকর্তা। দু’জন রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রালয়ের ডেপুটি মিনিস্টার। শুধু তাই নয় নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নাম রয়েছে রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের ডিরেক্টরেরও।
এছাড়া 'State Scientific Research Institute for Organic Chemistry and Technology'-নামের সংস্থাটির উপরও বলবৎ হয়েছে একাধিক বিধিনিষেধ। গত বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যদেশগুলির ২৭ জন প্রতিনিধি রুশ কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নেন।
এর আগে নাভালনি মামলায় অযথা মস্কোর নাম জড়ালে পাল্টা নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। গত বুধবার জার্মানির বিরুদ্ধে তোপ দেগে সের্গেই লাভরভ বলেন, আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাবি উঠলেও নাভালনি সম্পর্কে কোনও তথ্য দিচ্ছে না জার্মানি। এমন অবস্থায় আমাদের ভাবতে হচ্ছে যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আর কোনও সম্পর্ক রাখা যায় কি না।
উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট সাইবেরিয়ার টমস্ক থেকে বিমানে মস্কো ফিরছিলেন অ্যালেক্সাই নাভালনি। মাঝ আকাশে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। উপায় না দেখে ওমস্ক শহরে বিমানের জরুরি অবতরণ করিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। নাভালনি ঘনিষ্ঠদের প্রাথমিক ধারণা, টমস্ক বিমানবন্দরে তার চায়ে বিষ মেশানো হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানান, নাভালনির স্নায়ুতন্ত্র ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছিল। কোমায় আচ্ছন্ন হন তিনি। সেটা বিষের প্রভাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। এরপর নাভালনির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকায় জার্মানির বার্লিনে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষার পর বিষ প্রয়োগের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেন। তারপর সুইডেন ও ফ্রান্সের গবেষণাগারও জানায়, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর বিরোধী নাভালনির উপর ভয়াবহ নার্ভ এজেন্ট নভিচক প্রয়োগ করা হয়েছিল।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ