চোখের পানির সমুদ্রে দেখেছেন কেউ! ব্রিটেনে এমন অবস্থায়ই চলছে। সরেজমিনে বাকিংহাম প্যালেসের সামনে গেলে দেখা যায়, নিরবে চোখের পানি ফেলা হাজার হাজার মানুষ দাঁড়িয়ে! প্রতিদিন এখানে এসে কিছুটা সময় কাটিয়ে যাচ্ছেন লাখো মানুষ। কেউ ফুল দিচ্ছেন, কেউ ছোট চিরকুটে লিখে যাচ্ছেন মনের কথা।
ইতিহাস বলে এর আগে ব্রিটেনে এতো মানুষ একসাথে চোখের পানি ফেলেছিলেন সম্ভবত প্রিন্সেস ডায়নার মৃত্যুর পর! সেটাও ২৫ বছর আগে!
বাকিংহাম প্যালেসের সামনে চোখের পানি ফেলা ক্রিষ্টিনা বলছিলেন, ৭০ বছরের শাসনামলে ৯৬ বছর বয়সী রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ ব্রিটেনকে তৈরি করেছেন একটি বহুজাতি, ধর্ম আর বিশ্বাসের দেশ হিসেবে।
পল আর্থার নামে ৬০ বছর বয়সী একজন বলছিলেন, আমরা জন্ম থেকেই দেখছি তিনি আমাদের রানি। আমরা সৌভাগ্যবান যে রূপকথার রানি নয়, বাস্তবের রানি দেখেছি।
স্টিভেন নামে একজন বলছিলেন, তিনি সাধারণ মানুষের জন্য রাজপরিবারের অনেক নিয়ম ভেঙে ছিলেন, রাজপরিবারকে জনগণের কাছাকাছি নিয়ে আসতে পেরেছিলেন।
রানির মরদেহ এখনও লন্ডনে পৌঁছায়নি, আগামীকাল মঙ্গলবার লন্ডন সময় সন্ধ্যা ৭টায়
মরদেহ পৌঁছাবে। সেখান থেকে বাকিংহাম প্যালেসে মরদেহ নিয়ে আসা হবে। ১৪ সেপ্টেম্বর, বুধবার মরদেহ শেষবারের মতো বের হবে বাকিংহাম প্যালেস থেকে। সেই বাকিংহাম প্যালেস যেখানে কাটিয়েছেন জীবনের তাৎপর্যপূর্ণ ৯৬ বছর। এখান থেকেই অর্ধেক পৃথিবী শাসন করেছেন জীবনের ৭০ বছর।
১৪ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর মরদেহ থাকবে ওয়েস্টমিনিস্টার হলে, জনসাধারণের শোক জানানোর জন্য। সর্বশেষ ২০০২ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মা'কে এখানে রাখা হয়েছিল, তখন প্রায় ২ লাখ মানুষ মরদেহে শোক জানাতে আসেন।
ধারণা করা হচ্ছে এর চেয়ে কয়েকগুণ বেশী মানুষ আসবেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে শোক জানাতে, শেষ বিদায় দিতে।
১৯ সেপ্টেম্বর, মরদেহ নেয়া হবে উইন্ডসর চ্যাপেলে, সেখানেই রয়েল ভল্টে শায়িত করা হবে প্রয়াত স্বামী প্রিন্স ফিলিপের পাশে। সেদিন জড়ো হবেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আমন্ত্রিত অতিথি ও বিশ্বনেতারা।
রাজপরিবার ও খ্রিষ্টান রীতিতে হয়তো সম্পন্ন হবে রানির জাগতিক সবকিছুর, তবে তিনি বেঁচে থাকবেন হাজার বছর ধরে, ইতিহাসের পথ ধরে। যেখানে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ শুধু এক রাজপরিবারের রানি নন, তিনি জনগণের রানি…।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন