নদীতে বাঁধ তৈরিতে পর্বতপ্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগ উঠল পাকিস্তানে। ১৯৮০ থেকে ’৯০ সালের মধ্যে যে বাঁধ নির্মান সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল, চার দশক পরেও তা সম্পূর্ণ হয়নি। আর সেই বাঁধ তৈরির জন্য সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের জন্য গঠিত তহবিলেও ব্যাপক দুর্নীতি সামনে এল। চার বছর আগে গঠিত হওয়া তহবিলে এখনও পর্যন্ত জমা পড়েছে ৪ কোটি ডলার। কিন্তু সেই তহবিলের প্রচারে খরচ হয়েছে তার থেকে অনেক বেশি- প্রায় ৬.৩ কোটি ডলার।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত খবরে দাবি করা হয়েছে, পাকিস্তানের সংসদ বিষয় কমিটির রিপোর্টেই তহবিল তছরুপ সংক্রান্ত এই তথ্য উঠে এসেছে। শুধু তাই নয়, বাঁধ তৈরির নকশায় বড়সড় ত্রুটিও ধরা পড়েছে। সিন্ধু নদীর উপর ডায়মর-ভাষা বাঁধ তৈরি হলে পাকিস্তানের বন্যা নিয়ন্ত্রণসহ অনেক সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা। কিন্তু দুর্নীতির আবর্তে এখনও সুরাহা অধরা।
সম্প্রতি ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ে নাজেহাল হয়েছে পাকিস্তান। বহু মানুষ ঘরছাড়া। বিপর্যয়ের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি নদীবাঁধগুলোর দিকেও আঙুল তোলা হয়েছে। এমন অবস্থায় সিন্ধু নদীর উপর নির্মীয়মাণ বাঁধের দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসায় পূর্ববর্তী সরকার প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮০-৯০ সালে বাঁধটির কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা কারণে তা বিলম্বিত হয়। কখনও প্রাকৃতিক কারণে, কখনও ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বাঁধের কাজ থমকে গিয়েছে। এমন অবস্থায় ২০১৮ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাকিব নিশার বাঁধ নির্মাণের জন্য একটি তহবিল গঠন করেন। সে সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইমরান খান। তিনিই ছিলেন ফান্ডের শীর্ষে। সাধারণ মানুষকে সেই তহবিলে অর্থ সাহায্যের আবেদন জানানো হয়। পাশাপাশি ক্রিকেটার ও সঙ্গীত শিল্পীদের কাছ থেকেও টাকা আসতে থাকে। সেনা ও সরকারি কর্মীরা তাদের বেতনের একটা বড় অংশ দান করেন সেই তহবিলে।
২০১৯ সালে সাকিব নিশার যখন প্রধান বিচারপতির পদ থেকে অবসর নেন, তখনই ফান্ডে মোটা টাকার ঘাটতি ছিল। বাঁধ তহবিল সংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরে বিস্ময়কর দাবি করেছেন সেই সাকিব। এখন তিনি বলছেন, আসলে বাঁধ তৈরির জন্য নয়, সচেতনতা প্রচার করতেই ফান্ডটি গঠন করা হয়েছিল। সূত্র: ভাইস, আরব নিউজ পিকে, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, এনডিটিভি, মানি কন্ট্রোল
বিডি প্রতিদিন/কালাম