পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় টানা ভারী বর্ষণে প্লাবিত হয়েছে একের পর এক গ্রাম। পানি নামতে শুরু করলেও কৃষকসহ সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ এখনও কাটেনি। দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের তীব্র সংকট, গবাদিপশু আক্রান্ত হচ্ছে খুরা রোগে। পাশাপাশি জমে থাকা পানিতে পঁচে যাচ্ছে বর্ষাকালীন সবজির ক্ষেত, ব্যাহত হচ্ছে রোপা আমনের চাষাবাদ।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, এলাকার বিভিন্ন খালে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ দেওয়ায় পানি স্বাভাবিকভাবে নিষ্কাশিত হচ্ছে না। ফলে জলাবদ্ধতা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। কৃষকরা প্রশাসনের কাছে এসব বাঁধ দ্রুত অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।
গত দুই সপ্তাহ ধরে ঘন মেঘ আর টানা বৃষ্টির কারণে সূর্যের দেখা না মিললেও শুক্রবার সকালে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হয়। এতে করে মানুষ কিছুটা স্বস্তি পেলেও, বাস্তব পরিস্থিতি খুব একটা বদলায়নি। অতিবৃষ্টিতে অনেক পুকুর ও মাছের ঘের উপচে মাছ ভেসে গেছে। কেউ কেউ জাল দিয়ে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন ক্ষতির পরিমাণ কমাতে। গ্রামীণ সড়কগুলোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সবজি চাষিরা জানিয়েছেন, জলাবদ্ধতার কারণে শসা, চিচিঙ্গা, ঢেঁড়শ, করলা, কাঁচা মরিচসহ বিভিন্ন সবজির ক্ষেত পঁচে গেছে। বাজারেও সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে সংকট।
কৃষক দুলাল জানান, তিনি জমিতে ধান রোপণ করেছিলেন, কিন্তু অতিবৃষ্টির পানিতে ক্ষেত তলিয়ে গেছে। বর্তমানে পানি নামতে শুরু করায় তিনি আবারও ধান রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আরেক কৃষক মজিবর বলেন, “জলাবদ্ধতার কারণে গো-খাদ্যের অভাব দেখা দিয়েছে। আমার পাঁচটি গরু খুরা রোগে আক্রান্ত হয়েছে।”
নীলগঞ্জ ইউনিয়নের কুমিরমারা গ্রামের সবজি চাষি মো. সুলতান বলেন, “জলাবদ্ধতার কারণে আমার বেশিরভাগ সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। কী করব বুঝতে পারছি না।”
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম জানান, কৃষকদের স্বার্থে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য উপজেলার খালগুলোর ওপর থাকা বাঁধগুলো পর্যায়ক্রমে অপসারণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল