‘আমি ক্লাস নাইন থেকে মূল পাঠ্য বইকে গুরুত্ব দিয়েছি বেশি। প্রতিটি লাইন মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। আমি বেশিক্ষণ পড়ালেখা করিনি। তবে যতক্ষণ পড়েছি, মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। বোর্ডের আগের প্রশ্নপত্রগুলো ফলো করেছি।’
এসএসসি পরীক্ষায় ১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২৮৫ নম্বর পাওয়া চট্টগ্রাম নাসিরাবাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিবিড় কর্মকার বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন। নিবিড় কর্মকার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার এসএসসির ফল ঘোষণার পর নিবিড় কর্মকার চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয়। রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে যায়।
বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা বলছেন, কেবল চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের মধ্যে নয়, সারা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছেন নিবিড়। তবে চট্টগ্রামের শিক্ষাবোর্ডের পক্ষ থেকে এ বিষয় আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়নি।
নিবিড় কর্মকার নগরীর আন্দরকিল্লা রাজা পুকুর লেইন এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকেন। তার বাবা জীবন কর্মকার বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। মা রিপা রায় প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। তাদের বাড়ি লক্ষীপুর জেলার রামগতি উপজেলায়।
শুক্রবার নগরীর একটি কোচিং সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নিবিড় কর্মকারকে দেশ সেরা কৃতি শিক্ষার্থী হিসেবে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এ সময় তার বাবা জীবন কর্মকার এবং মা রিপা রায় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে নিবিড় কর্মকার বলেন, আমার বাবা-মা আমার জন্য যে পরিশ্রম করেছে, আমি তার ফল দেখাতে পেরেছি। এজন্য আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে, বাবা-মায়ের এবং আমার শিক্ষকদের কাছে কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতে আমি ইঞ্জিনিয়ার হতে চাই।
নিবিড়ের বাবা জীবন কর্মকার বলেন, প্রত্যেক বাবা-মা চায় তার সন্তান ভাল ফলাফল করুক। তেমনি আমরাও করেছি। তবে এই ফলাফল পাওয়ার জন্য সবচেয়ে বেশি অবদান রয়েছে নিবিড়ের মায়ের। কারণ শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত আমরা নিজেরাই তাকে পড়ালেখা করিয়েছি। তার মায়ের হাতের লেখা খুবই সুন্দর। সেটা হুবহু কপি করেছে নিবিড়।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. পারভেজ সাজ্জাদ চৌধুরী বলেন, ফল ঘোষণার পর থেকে নিবিড় কর্মকার চট্টগ্রাম বোর্ডের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের পক্ষ থেকে এমন কোনো তালিকা হয়নি। টপ টেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা টপ টেন শিক্ষার্থীর তালিকা না করতে মন্ত্রণালয়ের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।
নিবিড় ১৩ বিষয়ের মধ্যে বাংলায় ২ নম্বর, ইংরেজি দুই বিষয় মিলে ৬ নম্বর, পদার্থ বিজ্ঞানে ৩ নম্বর, জীববিজ্ঞানে ১ নম্বর, বাংলাদেশে ও বিশ্ব পরিচয় বিষয়ে ২ নম্বর এবং ধর্মে ১ নম্বর মিলে মোট ১৫ নম্বর কম পেয়েছেন।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ৭২ দশমিক ০৭ শতাংশ শিক্ষার্থী। যা গত চার বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম। বোর্ডে এবার ১ হাজার ১৬৪ স্কুলের ১ লাখ ৪১ হাজার ৩৩ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। যার মধ্যে ১১ হাজার ১১ হাজার ৮৪৩ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। এ বছর অকৃতকার্য হয়েছে ৩৯ হাজার ২০৭ জন পরীক্ষার্থী।
বিডি প্রতিদিন/এমআই