আশির দশকের মাঝামাঝি নীলফামারীর ডোমার উপজেলার কলমদার নদীর ওপর দুটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়। একটি শাহ কলমদার মাজারের পাশে। অন্যটি ধরনীগঞ্জ হাটের পাশে সোনারায় এবং হরিণচড়া ইউনিয়নের সংযোগস্থলে। নদী খননের কারণে প্রায় পাঁচ বছর আগে বর্ষায় ব্রিজ দুটি দেবে যায়। এরপর ভেঙে যায়। সেই থেকে হরিণচড়া ও সোনারায় ইউনিয়নের ১৭ গ্রামের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মাঝেমধ্যে ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সংশ্লিষ্টরা জানায়, কলমদার নদীর খননের ফলে বর্ষায় পানির তোড়ে সেতুর নিচের মাটি সরে গেছে। এতে সেতুর মাঝের অংশ দেবে গিয়ে ভেঙে পড়েছে। ধরনীগঞ্জ (হংশরাজ) এলাকার এই সেতু আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নির্মাণ করেছিল। দীর্ঘ প্রায় চার দশক ধরে এটি ডোমার উপজেলার সঙ্গে পার্শ্ববর্তী দুই জেলার মানুষের যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম হিসেবে কাজ করে আসছিল। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ আর প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেতুটি কার্যকারিতা হারিয়ে একটি মারণফাঁদে পরিণত হয়েছে।
ধরনীগঞ্জ (হংশরাজ) এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এর ওপর দিয়ে হেঁটে যাওয়াও নিরাপদ নয়। তার পরও রিকশাভ্যান, অটোবাইক, সিএনজিসহ বিভিন্ন যানবাহন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ভাঙা ব্রিজ দিয়েই চলাচল করছে। ওই এলাকার আমিনুর রহমান বলেন, বর্ষাকালে ব্রিজের ওপর দিয়ে পানি ওঠে। এতে যাতায়াতের সমস্যা হয়। বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে। চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা আসে দেখে চলে যায়। কাজ আর হয় না। ব্রিজটি পুনর্নির্মাণ হলে এলাকাবাসীর অনেক সুবিধা হবে।
হরিণচড়া ইউনিয়নের হংশরাজ গ্রামের বাসিন্দা শরীফুল ইসলাম বলেন, নদী খননের ফলে ব্রিজটি দেবে গিয়ে ভেঙে যায়। পথচারীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে। দ্রুত ব্রিজটি পুনর্নির্মাণ প্রয়োজন।
ডোমার উপজেলার সোনারায় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফিরোজ চৌধুরী বলেন, কলমদার নদী খনন করার কারণে দুটি ব্রিজই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি ব্রিজ দুটি পুনর্নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, কলমদার নদীটি খনন করার আগে একটি ব্রিজ সামান্য দেবে গিয়েছিল। নদী খননের ফলে পানির গতি বৃদ্ধি পায়। পানির প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ব্রিজ দুটি দেবে যায়।
ডোমার উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফিরোজ আলম বলেন, বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছেন।