ইউক্রেনে লেপার্ড ট্যাংক পাঠানোর বিষয়ে জার্মানির অনুমতি চাইবে পোল্যান্ড। দেশটির প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি সোমবার এই তথ্য জানিয়েছেন।
আল জাজিরার খবর অনুসারে, জার্মানির তৈরি উন্নত এই ট্যাংক কিয়েভকে পাঠানো নিয়ে কিয়েভের মিত্রদেশগুলোর মধ্যে টানাটানি চলছে। এ পরিস্থিতিতে মোরাউইকি গত সোমবার তার দেশ থেকে লেপার্ড ট্যাংক কিয়েভকে দেওয়ার কথা বলেন। এ ক্ষেত্রে জার্মানি রাজি না থাকলেও তারা বিষয়টি অগ্রাহ্য করবেন।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালিনা বায়েরবোক অবশ্য গত রোববারই বলেছেন, যুদ্ধে সহায়তার জন্য পোল্যান্ড লেপার্ড–২ ট্যাংক ইউক্রেনে পাঠাতে চাইলে তার সরকার বাধা দেবে না।
ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর হামলার বর্ষপূর্তি হতে চলেছে আগামী মাসে। যুদ্ধের প্রথম বার্ষিকীতে ইউক্রেনকে কী ধরনের বা কত যুদ্ধসরঞ্জাম সহায়তা দেওয়া হবে, তা নিয়ে পশ্চিমা মিত্ররা আলোচনা করছেন। জার্মানিতে এ আলোচনার কেন্দ্রে ছিল লেপার্ড–২ নামের বিশেষায়িত ট্যাংক কিয়েভকে দেওয়ার বিষয়টি। কিন্তু জার্মানি প্রথমে এতে সম্মত হয়নি। এখন তৃতীয় দেশের মাধ্যমে তা পাঠাতে রাজি জার্মানি।
ইউক্রেনের পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলে এখনো রুশ বাহিনীর সঙ্গে ইউক্রেনের বাহিনীর লড়াই চলছে। আগামী বসন্তে দুই পক্ষ আরও হামলা জোরদার করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বতর্মানে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে বাখমুত শহরটি ঘিরে লড়াই চলছে। সেখানে পুতিনের ভাড়াটে সেনা ওয়াগনার গ্রুপের সঙ্গে রুশ সেনারা মিলে ইউক্রেনীয় বাহিনীর ওপর হামলা চালাচ্ছে। গত রোববার রাশিয়া দাবি করে, ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলেও তাদের সেনারা অবস্থান মজবুত করেছে।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এতে ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমাদের আগ্রহ কমে যেতে পারে। গণমাধ্যমে আসা প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির সেনাবাহিনী উচ্চমূল্যে খাদ্যদ্রব্য কিনে মজুত করে রেখেছে। দেশটির একজন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে খাদ্যে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তিনি পদত্যাগ করেছেন।
ইউক্রেনের কর্মকর্তারা কয়েক মাস ধরে জার্মানির তৈরি লেপার্ড-২ ট্যাংক সরবরাহ করতে পশ্চিমা মিত্রদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন। তবে বার্লিন তাতে সাড়া দেয়নি। ন্যাটোর অন্য কোনো সদস্যদেশকেও সেটি করার অনুমতি দেয়নি।
লেপার্ড-২ ট্যাংক হলো বিশ্বের অন্যতম প্রথম সারির যুদ্ধট্যাংক। জার্মানির তৈরি এ ট্যাংক জার্মানির সেনাবাহিনী এবং অনেক ইউরোপীয় দেশের সামরিক বাহিনী এ ট্যাংক ব্যবহার করে। ইউরোপীয় নয়, এমন দেশগুলোর মধ্য কানাডা ও ইন্দোনেশিয়া এই ট্যাংক ব্যবহার করে। আফগানিস্তান, কসোভো ও সিরিয়ার সংঘাতে ডিজেল ইঞ্জিনচালিত এ যুদ্ধট্যাংকের ব্যবহার দেখেছে বিশ্ববাসী। এর আগে জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্রদের সঙ্গে সমন্বয় করে অস্ত্র সরবরাহের ব্যাপারে সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল