বরিশালের গ্রামীণ পরিবেশ ঘুরে আনন্দ চিত্তে পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছে সুইচ ও জার্মানির ২৮ পর্যটকবাহী প্রমোদতরী ভারতের ‘গঙ্গা বিলাস’।
বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার পর বরিশাল নদী বন্দরের মেরিনওয়ার্কশপ ঘাট ত্যাগ করে পাঁচতারকা হোটেল মানের এই রিভার ক্রুজ।
এর আগে সকাল থেকে ট্রলার যোগে নৌপথে এবং সড়ক পথে জেলার বানারীপাড়া এবং পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেরার বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করেন তারা। প্রথম দিন গতকাল বুধবার বিকেলে পরিদর্শন করেন বরিশাল নগরীর ২শ’ বছরের পুরনো অক্সফোর্ড মিশন চার্চ।
গঙ্গা বিলাসের ট্যুর অপারেটর কোম্পানি ‘জার্নি প্লাস’র প্রধান নির্বাহী তৌফিকুর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ট্রলারযোগে সন্ধ্যা নদী হয়ে বানারীপাড়ার মাহমুদকাঠী পৌঁছে সড়ক পথে গ্রামের মধ্যে একটি বাজার পরিদর্শন করেন সুইচ ও জার্মানির ২৮ পর্যটক। পরে স্বরূপকাঠীর ভাসমান টিম্বার (কাঠ) ব্যবসা, ভাসমান সবজী মার্কেট এবং কুড়িয়ানা গ্রাম পরিদর্শন করেন তারা। সেখান থেকে সড়ক পথে বরিশাল পৌঁছে দুপুর আড়াইটার পর পরবর্তী গন্তব্যের উদ্দেশ্যে স্থানীয় নদী বন্দর ত্যাগ করে পর্যটকবাহী গঙ্গা বিলাস।
তৌফিকুর রহমান আরও জানান, বরিশালের দুই উপজেলার গ্রামীণ পরিবেশে বেরিয়ে তারা খুবই উৎফুল্ল। প্রত্যাশার চেয়েও বেশী কিছু উপভোগ করছে তারা। পর্যটকদের বেশীরভাগই অবসর জীবন উপভোগ করছেন বলে তিনি জানান। এর মধ্যে শারীরিকভাবে অক্ষমও একজন রয়েছেন।
গত ১৩ জানুয়ারি ভারতের উত্তর প্রদেশের বারাণসীর রবিদাস ঘাট থেকে গঙ্গা বিলাসের ৫১ দিনের প্রমোদ ভ্রমণ শুরু হয়। ভারতের ৫টি প্রদেশের ২ হাজার ১শ’ এবং বাংলাদেশের জলসীমায় ১ হাজার ১শ’ কিলোমিটারসহ মোট ৩ হাজার ২শ’ কিলোমিটার নৌপথ পাড়ি দিয়ে প্রমোদতরীটি আগামী পহেলা মার্চ আসামের ডিব্রুগড় পৌঁছে পৃথিবীর দীর্ঘতম প্রমোদ ভ্রমণের রেডর্ক করতে যাচ্ছে। পথেমধ্যে তারা ৫১টি ট্যুরিস্ট স্পট পরিদর্শন করছে। বাংলাদেশের জলসীমার ২৭টি নদী অতিক্রম করছে ক্রুজটি।
বরিশাল ত্যাগ করার পর ক্রুজটি নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, টাঙ্গাইল ও কুড়িগ্রাম সীমান্ত হয়ে ফের ১৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের আসাম জলসীমায় প্রবেশ করবে।
বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় জলসীমায় প্রবেশ করার পর সংশ্লিষ্ট এলাকার পুলিশ, নৌ পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ সহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী জাহাজটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে বলে জানিয়েছেন কুয়াকাট রিজিওন ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত সুপার আবুল কালাম আজাদ।
জলের বুকে পাঁচতারা হোটেলের মানের এই ক্রুজে ১৮টি লাক্সারি স্যুট রয়েছে। স্যুটে শাওয়ার সহ বাথরুম, রূপান্তরযোগ্য বিছানা, ফ্রেঞ্চ ব্যালকনি, এলইডি টিভি, স্মোক ডিটেক্টর, লাইভ ভেস্ট, স্প্রিঙ্কলার, রেস্তোরাঁ, স্প্যা, সানডেক ও জিম রয়েছে। ৮০ জন পর্যটক ভ্রমণের ব্যবস্থা রয়েছে গঙ্গা বিলাসে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত