পাকিস্তানের নির্বাচনে জল্পনা-কল্পনা পেছনে ফেলে ফলাফলে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পিটিআই এগিয়ে রয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলেছিলেন কারাগার থেকে এবার সুবিধাজনক অবস্থানে যেতে পারবেন না ইমরান খান। তাদের সেই আভাস ভুল প্রমাণ করে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি আসন জিতে নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকালে পাকিস্তানে ভোটগ্রহণ শেষ হলেও সরকার গঠন করবে কারা তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা। তবে চূড়ান্ত ফল ঘোষণার আগেই পিএমএল-এন প্রধান নওয়াজ শরিফ বিজয় ভাষণ দিয়ে দিয়েছেন। ওই ভাষণে তিনি জোট সরকার গঠনের ইঙ্গিত দেন। তবে পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কী করবেন বা তাদের অবস্থান কোথায়, তা এখনো জানা যায়নি।
পাকিস্তানে ২৬৫ আসনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন ঘোষিত ২৫১ আসনের প্রাথমিক ফলাফলে ইমরানের দল পিটিআই-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই সবচেয়ে বেশি আসনে জয়ী হয়েছেন। আসন সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মুসলিম লীগ। তৃতীয় স্থানে বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির পিপলস পার্টি বা পিপিপি।
তবে নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্যের পরও পিটিআই এখনো সুবিধাজনক অবস্থানে নেই। কারণ, এবারের নির্বাচনে তারা ব্যাট প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি পায়নি। তাদের শীর্ষ নেতা ইমরান খান একের পর এক মামলায় কারাগারে আছেন। ফল ঘোষণার দিনে ইমরান খান ১৪ মামলায় জামিন পেলেও মুক্তি পেতে জামিন নিতে হবে আরও অনেক মামলায়।
ফলে ইমরান খান সমর্থিত প্রার্থীরা সর্বোচ্চ সংখ্যক আসনে জয়ী হলেও, হয়তো সরকার গঠন করতে পারছে না পিটিআই। কারণ, সংখ্যালঘুদের জন্য নির্ধারিত আসনে তাদের জন্য কোটা বরাদ্দ থাকবে না। তাহলে পিটিআইয়ের সামনে এখন কোন পথ খোলা আছে?
পাকিস্তানি নির্বাচন বিশ্লেষকদের মতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মিলে একটি দল গঠনের চেষ্টা করতে পারে। যার নাম হতে পারে ইনসাফ বা অন্যকোনো কিছু। সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করলে তাদের পরিণতি শুভ নাও হতে পারে।
এর আগে ১৯৮৫ সালে জেনারেল জিয়াউল হকের সময়ে এর চেয়ে বেশি স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন গোটা পার্লামেন্টই ছিল স্বতন্ত্রদের দখলে। নির্বাচিত প্রার্থীরা পার্লামেন্টে যাওয়ার পর ঐক্যবদ্ধ হলে সেই দলের নাম দেওয়া হয় পাকিস্তান মুসলিম লীগ, যার থেকে বর্তমান পিএমএল-এন এবং পিএমএল-কিউয়ের সৃষ্টি।
নির্বাচনে পিটিআই তাদের প্রতীক ব্যবহারের অনুমতি না পেলেও জনগণের বিশাল সমর্থন পেয়েছে। সরকার গঠন করতে না পারলেও স্বতন্ত্ররা বিরোধীদলে থাকতে পারবেন, তবে তাদের একটি দলে যোগ দিতে হবে বলে মনে করেন সে দেশের রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল