ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, সম্ভাব্য যেকোনো শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার সঙ্গে ভূখণ্ড বিনিময়ের প্রস্তাব দেবে ইউক্রেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজ দেশের এমন অবস্থানের কথা জানান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া ইউরোপের একার পক্ষে ইউক্রেনকে রক্ষা করা সম্ভব নয় বলেও স্বীকার করেন জেলেনস্কি। তাঁর ভাষায়, “আমেরিকা ছাড়া নিরাপত্তা গ্যারান্টি প্রকৃতপক্ষে কোনো নিরাপত্তা গ্যারান্টি নয়।”
রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চল বর্তমানে ইউক্রেনের দখলে রয়েছে। দৃশ্যত এটিই মস্কোকে ফেরত দিয়ে কিয়েভ তার হারানো ভূখণ্ড উদ্ধার করতে চায়। তবে কুরস্কের বিনিময়ে ইউক্রেন কোন অঞ্চল ফেরত চাইবে, সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান জেলেনস্কি।
ট্রাম্পের অবস্থান ও মার্কিন স্বার্থ
এমন সময়ে জেলেনস্কি এই মন্তব্য করলেন, যখন কিছুদিন আগেই ফক্স নিউজ-এর সঙ্গে আলাপকালে ইউক্রেন ইস্যুতে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, “তারা (ইউক্রেন) হয়তো একটি চুক্তি করতে পারে, হয়তো করতে না-ও পারে। তারা চাইলে কোনো এক সময় রাশিয়ার অংশ হতে পারে, আবার না-ও হতে পারে।”
ট্রাম্প আরও জানান, যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত কিথ কেলোগকে ইউক্রেনে পাঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি ইউক্রেনে মার্কিন বিনিয়োগের বিনিময়ে দেশটির প্রাকৃতিক সম্পদ, বিশেষ করে বিরল খনিজের দাবি জানান তিনি। “আমরা সেখানে এত অর্থ ঢালছি! আমি বলেছি, সেটা ফেরত চাই। সমপরিমাণ কিছু চাই, যেমন ৫০০ বিলিয়ন ডলারের বিরল খনিজ এবং তারা এতে সম্মত হয়েছে।”
রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চল ও ক্রেমলিনের প্রতিক্রিয়া
এএফপি জানায়, বর্তমানে ইউক্রেনের পাঁচটি অঞ্চল রাশিয়ার দখলে রয়েছে—ক্রিমিয়া, দোনেৎস্ক, খেরসন, লুগানস্ক ও জাপোরিঝিয়া। এর মধ্যে ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া এবং ২০২২ সালে বাকি চারটি অঞ্চল দখল করে রুশ বাহিনী।
এদিকে ক্রেমলিন দাবি করেছে, “ইউক্রেনের উল্লেখযোগ্য অংশ রাশিয়ার অংশ হতে চায়।” ট্রাম্পের বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর বলেছে, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বক্তব্যে ইউক্রেনের বর্তমান বাস্তবতা অনেকাংশেই প্রতিফলিত হয়েছে।”
সূত্র: পলিটিকো, দ্য গার্ডিয়ান, এএফপি, ফক্স নিউজ
বিডি প্রতিদিন/আশিক