যুদ্ধের আগুন যখন ইয়েমেনের আকাশে দাউ দাউ করে জ্বলছে, তখন হুথি বিদ্রোহীরা ইসরায়েলকে এক ‘হট সামারের’ দুঃস্বপ্নের হুমকি দিয়ে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে উত্তেজনার পারদ চড়িয়েছে।
বুধবার সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তীব্র ক্ষোভ আর প্রতিশোধের আগুন নিয়ে হুথির শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা মাহদি আল-মাশাত ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর হুঙ্কার দেন, আমরা পিছু হটব না, আত্মসমর্পণও করব না। গাজায় ফিলিস্তিনিদের প্রতি আমাদের সমর্থন অটুট থাকবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে মাহদি আল-মাশাত হুঁশিয়ারি দেন, ইয়েমেনি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছাতে সক্ষম। আশ্রয়কেন্দ্রেও কেউ নিরাপদ থাকবে না। এমনকি বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরের ফ্লাইটও ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইয়েমেনে ইসরায়েলের এটি ছিল দশম হামলা। এর আগে সিমেন্ট কারখানা, জ্বালানি অবকাঠামো ও বন্দর এলাকাগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এই হামলাগুলো ইয়েমেনের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেওয়ার এক সুদূরপ্রসারী কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ইসরায়েলের এই হামলাগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে খোদ ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ মহলে সমালোচনা বাড়ছে। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এই হামলাগুলো হুথিকে দমাতে পারেনি বরং তাদের প্রতিশোধের আগুনকে আরও উসকে দিয়েছে।
এরই মধ্যে হুথি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য জানানো হয়েছে। তারা দাবি করেছে, মে মাসের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ২২টি হামলা করেছে। তাদের মতে, এটি ছিল ইসরায়েলের জন্য সবচেয়ে বেদনাদায়ক মাস।
এই উত্তেজনার মধ্যে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে চলেছে। ইয়েমেনের এই সংঘাত শুধু ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, বরং ইরান-সৌদি আরব এবং আঞ্চলিক ক্ষমতা প্রদর্শনের এক বৃহত্তর খেলার অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: আনাদোলু
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল