মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং রক্ষণশীল আন্দোলনের কর্মী শার্লি কার্ককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। রিপাবলিকান পার্টির তরুণ ভোটারদের সংগঠিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিলেন কার্ক।
বুধবার ইউটাহ অঙ্গরাজ্যের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
এই ঘটনাকে একটি ‘রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে অভিহিত করেছেন ইউটাহ’র গভর্নর স্পেন্সার কক্স।
গভর্নর কক্স বলেন, আজ আমাদের রাজ্যের জন্য একটি কালো দিন। এটি আমাদের জাতির জন্যও একটি মর্মান্তিক দিন। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এটি একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড।
এদিকে, কার্ককে হত্যার ঘটনায় বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। তবে, ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) পরিচালক কাশ প্যাটেল প্রথমে সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলেন যে, একজন সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে।
পরে অবশ্য তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আটক হওয়া ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।
এদিকে, ইউটাহ ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানে তোলা ভিডিওগুলো সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, কার্ক একটি সাদা তাঁবুর নিচে বসে হাতে ধরা মাইক্রোফোনে কথা বলছেন। তাঁবুটিতে ‘দ্য আমেরিকার কামব্যাক’ এবং ‘প্রুভ মে রং’ স্লোগানগুলো লেখা ছিল। হঠাৎ একটি গুলির শব্দ শোনা যায়। তখন কার্কের গলার বাম পাশ থেকে প্রচুর রক্ত বের হতে দেখা যায়। হতবাক দর্শকরা আর্তনাদ ও চিৎকার করতে থাকেন এবং ছোটাছুটি শুরু করেন।
বার্তা সংস্থা এপি নিশ্চিত করেছে যে, ভিডিওগুলো ইউটাহ ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ের সোরেনসেন সেন্টার প্রাঙ্গণে ধারণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ইউটাহ ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ে কার্ক তার অলাভজনক রাজনৈতিক সংস্থার উদ্যোগে আয়োজিত একটি বিতর্কে অংশ নিচ্ছিলেন। গুলির ঠিক আগে, কার্ক দর্শক সারির একজন শ্রোতার কাছ থেকে গণগুলি এবং বন্দুক সহিংসতা নিয়ে প্রশ্ন নিচ্ছিলেন।
এক শ্রোতা কার্ককে জিজ্ঞাসা করেন যে, আপনি কি জানেন গত ১০ বছরে জনগণের ওপর যত হামলা হয়েছে, এর মধ্যে কতজন মার্কিন রূপান্তরকামী ছিলেন? জবাবে কার্ক বলেন, অনেক।
ওই শ্রোতা আবার জিজ্ঞাসা করেন, আপনি কি জানেন গত ১০ বছরে আমেরিকায় কতজন গণ-হামলাকারী ছিল?”
কার্ক জিজ্ঞাসা করেন, গ্যাং সহিংসতা গণনা করে নাকি বাদ দিয়ে?
এরপরই একটি গুলির শব্দ শোনা যায়।
ইউটাহ’র গভর্নর কক্স জানান, কালো পোশাক পরিহিত এক বন্দুকধারী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে কিছুটা দূরে একটি ছাদ থেকে গুলি চালিয়েছিল।
কার্ককে গুলি করার খবরটি প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানান ট্রাম্প। তিনি ৩১ বছর বয়সী কার্ককে টার্নিং পয়েন্ট ইউএসএ নামে একটি তরুণ সংস্থার সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও, মহান, এমনকি কিংবদন্তি হিসেবে প্রশংসা করেন।
বুধবার রাতে হোয়াইট হাউস থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করে কার্ককে ‘সত্য এবং স্বাধীনতার জন্য একজন শহীদ’ বলে অভিহিত করেন ট্রাম্প। পাশাপাশি উগ্র বামপন্থীদের অপ্রয়োজনীয় বক্তব্যের এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সূত্র : এপি
বিডি প্রতিদিন/কেএ