যুদ্ধের ভয়াবহতায় গাজার পর আরেক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে সুদানের উত্তর দারফুরের রাজধানী এল-ফাশার। র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) গত ২৬ অক্টোবর শহরটি দখল করার পর ভয়াবহতা তীব্র আকার ধারণ করেছে। সেখানে নির্যাতন, হত্যাকাণ্ড, লুটপাট ও জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত করা হচ্ছে।
জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, এল-ফাশারে বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে ‘অকল্পনীয় নৃশংসতা’ চালানো হচ্ছে।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, শহরের মোট ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষের মধ্যে অন্তত ৮২ হাজার মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। বহু মানুষ আটকা পড়েছে, নিরাপদে বের হওয়ার পথ খুঁজে পাচ্ছেন না।
শনিবার জাতিসংঘের সুদানে নিযুক্ত মানবাধিকার প্রতিনিধি লি ফাং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স-এ এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, গত ১০ দিনে এল-ফাশারে ভয়াবহ হামলা চালানো হয়েছে। ১৮ মাসের অবরোধ ও সংঘাত থেকে বেঁচে যাওয়া সাধারণ মানুষের ওপর নৃশংসতার মাত্রা কল্পনাতীত।
তিনি আরও জানান, শত শত মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। যার মধ্যে নারী, শিশুও রয়েছেন। হাসপাতাল ও স্কুলে আশ্রয় নিয়েও অনেকে রক্ষা পায়নি। বহু পরিবার নিখোঁজ রয়েছে।
এদিকে এল-ফাশার থেকে পালিয়ে আসা হাজারো মানুষ উত্তর দারফুরের তাওইলা শহরে আশ্রয় নিয়েছেন। সুদানের অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি ও শরণার্থী সহায়তা সংগঠনের মুখপাত্র আদম রোজাল জানান, ১৬ হাজারের বেশি মানুষ তাওইলায় আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকের কাছে খাবার, ওষুধ, থাকার ব্যবস্থা কিছুই নেই।
সংগঠনটি প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, অস্থায়ী তাঁবু, ছেঁড়া ত্রিপল ও কাপড় দিয়ে মানুষজন আশ্রয় বানিয়েছে। অনেক পরিবার দিনে মাত্র একবেলা খাবার পাচ্ছেন। আন্তর্জাতিক চিকিৎসা সহায়তা সংস্থা ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস জানিয়েছে, শিশু ও বয়স্করা ভয়াবহ মাত্রায় অপুষ্টিতে ভুগছেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালে সুদানের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান ও আধাসামরিক বাহিনী আরএসএফ প্রধান মোহাম্মদ হামদানের মধ্যে ক্ষমতা ও সামরিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চরম বিরোধ সৃষ্টি হয়। আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা ও নেতৃত্ব নিয়ে দুই পক্ষের সংঘাত শুরু হয়।
সূত্র: আল-জাজিরা
বিডি-প্রতিদিন/এমই