রবিবার, ১২ মে, ২০১৯ ০০:০০ টা

উপসাগরের পথে বিমানবাহী মার্কিন জাহাজ ‘আর্লিংটন’

ইরানকে চাপে রাখার কৌশল

উপসাগরের পথে বিমানবাহী মার্কিন জাহাজ ‘আর্লিংটন’

পরমাণু চুক্তি ও হরমুজ প্রণালি নিয়ে ইরানের সঙ্গে বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে একটি প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাপনা ও যুদ্ধজাহাজ পাঠাচ্ছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। উভচর যান ও উড়োজাহাজ পরিবহনে সক্ষম ইউএসএস ‘আর্লিংটন’ শিগগিরই উপসাগরে থাকা অপর যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস আব্রাহাম লিংকনের সঙ্গে যোগ দেবে, বলেছেন তারা। এরই মধ্যে কাতারের মার্কিন ঘাঁটিতে বেশ কয়েকটি বি-৫২ বোমারু বিমান পৌঁছেছে বলেও পেন্টাগনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বাহিনীর ওপর ইরানের সম্ভাব্য হামলার হুমকি মোকাবিলায় এসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তেহরানের কাছ থেকে হুমকির মাত্রা সম্পর্কে সুস্পষ্ট কিছু বলেননি মার্কিন কর্মকর্তারা। অন্যদিকে ইরান তাদের দিক থেকে হুমকির বিষয়টিকে ‘বাজে কথা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে হস্তক্ষেপের লক্ষ্যে ‘মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’ চালাতেই ওয়াশিংটন মধ্যপ্রাচ্যে একের পর এক অস্ত্র ও যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করছে বলে অভিযোগ তাদের। ‘যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক নৌযান (ইরানের) কেবল একটি ক্ষেপণাস্ত্রেই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে,’ ইরানের জ্যেষ্ঠ ধর্মীয় নেতা ইউসুফ তাবাতাবি-নেজাদ এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বলেও জানিয়েছে দেশটির আধাসরকারি বার্তা সংস্থা ইরনা। পেন্টাগন বলেছে, তারা ইরানের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াতে চায় না। তবে ওয়াশিংটন ওই অঞ্চলে মার্কিন বাহিনী এবং স্বার্থ সুরক্ষায় প্রস্তুত। ‘ইরানের কার্যক্রমে কড়া নজরদারি অব্যাহত রাখছে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়,’ শুক্রবারের বিবৃতিতে বলেছে পেন্টাগন। মধ্যপ্রাচ্যে যে প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাপনা মোতায়েন করা হচ্ছে, তা ব্যালাস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং অত্যাধুনিক জঙ্গি বিমানের সম্ভাব্য হামলা মোকাবিলায় বেশ কার্যকর বলেও আশ্বস্ত করেছে তারা। ২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের প্রত্যাহার করে নিলে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে শুরু করে। নিজেদের সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি ওয়াশিংটন তেহরানের ওপর আগের সব নিষেধাজ্ঞাও পুনর্বহাল করেছে। ইরানের তেল রপ্তানি বন্ধে ক্রেতাদের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে তারা। ইরান বলেছে, তাদের তেল রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্র বাধা হয়ে দাঁড়ালে তারাও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হরমুজ প্রণালি বন্ধ করে দেবে। হরমুজ দিয়েই মধ্যপ্রাচ্যের বেশির ভাগ তেলবাহী জাহাজ ইউরোপ ও আমেরিকায় যায়। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীকে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠনের’ তালিকায়ও অন্তর্ভুক্ত করেছে। মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন বলেছেন, যুদ্ধজাহাজ মোতায়েনের মাধ্যমে ইরানের শাসকদের স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে। ‘ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের ওপর যে কোনো আঘাত অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে মোকাবিলা করা হবে,’ বলেছেন তিনি। যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস আর্লিংটন কবে উপসাগরে পৌঁছাবে তার ধারণা পাওয়া যায়নি। ইউএসএস আব্রাহাম লিংকন বৃহস্পতিবার সুয়েজ খালের ভিতর দিয়ে অগ্রসর হচ্ছিল বলে জানিয়েছে মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ড।

সর্বশেষ খবর