ইতালিতে নতুন যুগের সূচনা হলো। এই প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাউকে পেল দেশটি। ইতালির প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে গতকাল শপথ গ্রহণ করলেন জর্জিয়া মেলোনি। শুধু তাই নয়, মেলোনির হাত ধরে আরও এক নজির তৈরি হলো সে দেশে। বেনিতো মুসোলিনির ফ্যাসিবাদী যুগের পর এই প্রথম সে দেশে কঠোর জাতীয়তাবাদী সরকার তৈরি হলো।
গতকাল ইতালির প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে প্রেসিডেন্ট সের্জিও মাত্তারেলার সামনে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথবাক্য পাঠ করেন ৪৫ বছর বয়সী জর্জিয়া। শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেন তিনি।
এদিকে ইতালির নতুন এ প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন। তার সঙ্গে গঠনমূলক সহযোগিতার আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এ মুহূর্তে যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি তা মোকাবিলায় ইতালির নতুন সরকারের সঙ্গে গঠনমূলক সহযোগিতা প্রত্যাশ্যা করছি।’ সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বার্লুসকোনির ফরচা ইতালিয়া ও মাত্তেও সালভিনির লিগের সঙ্গে জোট বেঁধে গত মাসের জাতীয় নির্বাচনে জয় পায় মেলোনির নেতৃত্বাধীন জাতীয়তাবাদী দল ব্রাদার্স অব ইতালি।
গত মাসে সে দেশে সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয় জর্জিয়ার ‘ব্রাদারস অব ইতালি’ দলের নেতৃত্বাধীন দক্ষিণপন্থি জোট। জয় প্রসঙ্গে মেলোনি বলেছিলেন, ‘এ জয় সবাইকে উৎসর্গ করতে চাই। ইতালির মানুষ আমাদের বেছে নেন। আমরা তাদের ঠকাব না।’
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে ইতালির প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেন মারিও দ্রাঘি। জোট সরকার আস্থা হারাতেই তিনি পদত্যাগ করেন বলে জানান। এর পরই সে দেশে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। ২৫ সেপ্টেম্বর ইতালিতে নির্বাচন হয়েছে। আর সেই নির্বাচনে লড়েই নতুন ইনিংস শুরু করলেন মেলোনি।
তবে চলমান পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী মেলোনিকে কঠিন সব চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- মন্দার হুমকি, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি ও ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে তৈরি হওয়া আন্তর্জাতিক রাজনীতির মোকাবিলা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইতালির ক্ষমতায় আসা ডানপন্থি এ দলটি রাষ্ট্র পরিচালনায় অনেক বেশি রক্ষণশীল নীতি গ্রহণ করতে পারে বলে আশঙ্কা বিশ্লেষকদের। এর মধ্যে ভূমধ্যসাগার পাড়ি দিয়ে এশিয়া ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশী এবং দেশটিতে থাকা অভিবাসীদের বিষয়টিও রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণায় অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার আভাস দিয়েছিলেন মেলোনি।