২৬ এপ্রিল, ২০২১ ০৭:২৪

আল্লাহ রমজানের দ্বিতীয় দশকে অগণিত বান্দাকে ক্ষমা করেন

মাইমুনা আক্তার

আল্লাহ রমজানের দ্বিতীয় দশকে অগণিত বান্দাকে ক্ষমা করেন

মহিমান্বিত রমজান মাসের রহমতের প্রথম দশক শেষ হয়ে গেছে। চলছে মাগফিরাতের দশক। মহান আল্লাহ রমজানের দ্বিতীয় দশকে অগণিত বান্দাকে ক্ষমা করেন। তবে আল্লাহর এই মাগফিরাত বা ক্ষমা পেতে হলে অবশ্যই খাঁটি অন্তরে তাওবা করতে হবে। কারণ যারা রমজানের মতো পবিত্র মাস পেয়েও নিজের গুনাহ ক্ষমা করিয়ে নিতে অক্ষম হবে, রাসুল (সা.) তাদের অভিশাপ দিয়েছেন।

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তার নাক ভূলুণ্ঠিত হোক, যার কাছে আমার নাম উল্লিখিত হলো; কিন্তু সে আমার ওপর দরুদ পাঠ করেনি। ভূলুণ্ঠিত হোক তার নাক, যার কাছে রমজান মাস এলো অথচ তার গুনাহ মাফ হয়ে যাওয়ার আগেই তা পার হয়ে গেল। আর ভূলুণ্ঠিত হোক তার নাক, যার কাছে তার মা-বাবা বৃদ্ধে উপনীত হলো; কিন্তু তারা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করায়নি (সে তাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করে জান্নাত অর্জন করেনি)।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৪৫)

তাই প্রত্যেক মুমিনের উচিত পবিত্র রমজান মাসে ইবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি বেশি বেশি তাওবা-ইস্তিগফারে মগ্ন থাকা। বিশেষ করে মাগফিরাতের এই দশকে তাওবা-ইস্তিগফারে গুরুত্ব দেওয়া জরুরি। মহান আল্লাহর কাছে বিশুদ্ধ হৃদয়ে খাঁটি তাওবা করলে তিনি অবশ্যই ক্ষমা করবেন। বান্দার পাপ যতই হোক না কেন, আল্লাহর রহমত তার চেয়ে অগণিত গুণ বেশি। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর কেউ কোনো মন্দ কাজ করে অথবা নিজের প্রতি জুলুম করে পরে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহকে সে ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু পাবে।’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১১০)

একটি কথা না বললেই নয় যে শুধু মুখে ‘আস্তাগফিরুল্লাহ ওয়া আতুবু ইলাইহি’ বলার নাম তাওবা ও ইস্তিগফার নয়। আলেমরা এ বিষয়ে একমত যে গুনাহে লিপ্ত ব্যক্তি যদি সে জন্য অনুতপ্ত না হয় এবং তা পরিত্যাগ না করে কিংবা ভবিষ্যতে পরিত্যাগ করতে সংকল্পবদ্ধ না হয়, তবে মুখে মুখে ‘আস্তাগফিরুল্লাহ’ বলা তাওবার সঙ্গে উপহাস বৈ কিছু নয়। তাওবার জন্য মোটামুটি তিনটি বিষয় জরুরি—(১) অতীত গুনাহর জন্য অনুতপ্ত হওয়া, (২) উপস্থিত গুনাহ অবিলম্বে ত্যাগ করা এবং (৩) ভবিষ্যতে গুনাহ থেকে বেঁচে থাকতে দৃঢ়সংকল্প হওয়া। তা ছাড়া বান্দাহর হকের সঙ্গে যেসব গুনাহর সম্পর্ক, সেগুলো বান্দাহর কাছ থেকেই মাফ করিয়ে নেওয়া কিংবা হক পরিশোধ করে দেওয়া তাওবার অন্যতম শর্ত।

তাই পবিত্র রমজানে প্রত্যেকেই গুনাহ ছেড়ে দেওয়ার দৃঢ়সংকল্প করে অতীতের গুনাহর তাওবা করা উচিত। অতীতে কারো হক নষ্ট করে থাকলে, তার কাছে ক্ষমা চেয়ে তার হক পরিশোধ করে দায়মুক্ত হয়ে নেওয়া উচিত। মহান আল্লাহ প্রত্যেক মুসলমানকে পবিত্র মাহে রমজানে পাপমুক্ত হওয়ার তাওফিক দান করুন।

বিডি প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন

সর্বশেষ খবর