শুরু হল ৪৩তম কলকাতা আন্তর্জাতিক বই মেলা-২০১৯। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কলকাতার সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্কে আনুষ্ঠানিকভাবে এ মেলার উদ্বোধন হয়।
প্রধান অতিথি হিসাবে মেলার উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতে নিযুক্ত গুয়াতেমালার রাষ্ট্রদূত জিয়োবান্নি কাসতিলো ও গুয়াতেমালার বিশিষ্ট সাহিত্যিক অধ্যাপক এউদা মোরালেস।
এছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাহিত্যিক শংকর, চিত্রশিল্পী যোগেন চৌধুরী, কলকাতর নতুন মেয়র ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, কলকাতা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সভাপতি শুধাংশু শেখর দে, গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।
গিল্ড ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সার্বিক সহযোগিতায় হচ্ছে এই বইমেলা, যা চলবে ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
এবারের কলকাতা বইমেলার থিম কান্ট্রি গুয়াতেমালা। স্বভাবতই মেলার কেন্দ্র বিন্দু থাকছে গুয়াতেমালার বিশাল প্যাভিলিয়ন।
এবারের বই মেলায় অংশ গ্রহণ করছে ব্রিটেন, আমেরিকা, রাশিয়া, জাপান, ভিয়েতনাম, চীন, বাংলাদেশ ছাড়াও লাতিন আমেরিকার ১১টি দেশ। বই মেলায় এবারই প্রথমবারের জন্য অংশ নিচ্ছে ইরানও। এছাড়াও দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, গুজরাট, উত্তর প্রদেশ, অরুণাচল, মহারাষ্ট্রসহ ভারতের অন্য রাজ্যগুলোও বইমেলায় তাদের স্টল দিয়েছে।
উদ্বোধনের পর মমতা ব্যানার্জি তার বক্তব্যে বলেন ‘বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা। যারা বইকে ভালবাসেন, বই ছাড়া ভাবতেই পারেন না-তাদের কাছে বইয়ের অপর নাম জীবন। আজকের দিনে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক, কম্পিউটার, ইন্টারনেট, টুইটারে, ফেসবুকে যতই কবিতা-গল্প লেখা হোক না কেন বই হাতে নিয়ে না পড়লে শান্তি হয় না। বই দিয়েই ভাষা শুরু হয়, কথা শুরু হয়, শেখা শুরু হয়, জীবন শুরু হয়। সেদিক থেকে বই আমাদের গর্বের। আর বিশ্বজুড়েই কলকাতা বইমেলার একটা জায়গা রয়েছে, এটা বিশ্বের সেরা বইমেলা।’
তিনি আরও বলেন ‘সব ভালো যার শেষ ভালো, আমি মনে করি বইমেলা হোক ঘরের আলো। বইমেলা সকলের জন্য স্বার্থক হোক, ভালো হোক।’
সমালোচকদের একহাত নিয়ে মমতা বলেন ‘বইমেলা শেষ দিন পর্যন্ত সবকিছু ভালো কাটুক। কোন দুষ্টু কেউ এসে যেন মেলার মিষ্টিকে কাড়তে না পারে। দুষ্টু ও মিষ্টি একসাথে কাজ করুক কিন্তু দুষ্টু এসে যেন মিষ্টিকে কাড়তে না পারে-সেদিকে নজর রাখতে হবে। বইমেলার যে সম্মান তা যেন অক্ষুন্ন থাকে।’
এদিকে বইমেলার মাঝেই ৩৬শ’ বর্গফুট জায়গা জুড়ে রয়েছে বাংলাদেশ প্যাভেলিয়ন। এবারের প্যাভিলিয়নটি করা হয়েছে ঢাকার ‘রোজ গার্ডেন’এর আদলে।
এবারে মোট স্টলের সংখ্যা ৬০০টি, যার মধ্যে ২০০টি লিটিল ম্যাগাজিনের স্টল। মেলায় প্রবেশের জন্য ৯টি দরজা রয়েছে।
উদ্বোধীন অনুষ্ঠান থেকেই মমতা ব্যানার্জির পাঁচটি বই প্রকাশিত হয়। বই পাঠকদের আকৃষ্ট করতে বইমেলার একটি বিশেষ আকর্ষণ ‘লাইব্রেরি বই’।
প্রতি তিন দিন অন্তর লাইব্রেরি লটারি হবে যেখানে বাছাই করা একজন বিজয়ীকে ১ লাখ রুপি মূল্যের বই সহ লাইব্রেরি সেল্ফ দেওয়া হবে।
এবারের বইমেলায় ৬ষ্ঠ কলকাতা সাহিত্য উৎসব অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৭ থেকে ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত। যেখানে ভারত ও বিভিন্ন রাষ্ট্রের লেখক, চিত্র পরিচালক, ঐতিহাসিক, কবি, থিয়েটার, ক্রীড়া জগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন। ১০ ফেব্রুয়ারি পালন করা হবে ‘বাংলাদেশ দিবস’।
এছাড়া বইমেলাকে কেন্দ্র করে প্রতিদিন থাকছে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বই মেলা চলবে প্রতিদিন দুপুর ১২ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত।
বিডি প্রতিদিন/কালাম