১৮ মে, ২০২১ ২০:১৬

নারদ মামলায় গ্রেফতার দুই মন্ত্রী কারাগারে, দুই নেতা হাসপাতালে

দীপক দেবনাথ, কলকাতা:

নারদ মামলায় গ্রেফতার দুই মন্ত্রী কারাগারে, দুই নেতা হাসপাতালে

‘নারদা স্টিং অপারেশন’ মামলায় অভিযুক্ত গ্রেফতারকৃত পশ্চিমবঙ্গের দুই মন্ত্রী সুব্রত মুখার্জি এবং ফিরহাদ হাকিমকে রাখা হয়েছে প্রেসিডেন্সি জেলে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক ও সাবেক পরিবহন মন্ত্রী মদন মিত্র এবং রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী ও কলকাতার সাবেক মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ভর্তি করা হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে। 

সোমবার সকালে এই চার নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। এরপর তাদের নিয়ে আসা হয় সিবিআই’এর কার্যালয় নিজাম প্যালেসে, সেখান থেকেই ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাদের সকলেরই কলকাতার ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বিশেষ সিবিআই আদালতে শুনানি চলে। নিম্ন আদালত তাদের চারজনকেই জামিন দিলেও রাতে কলকাতা হাইকোর্ট ওই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ দেয় এবং আগামী বুধবার পর্যন্ত তাদের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। ফলে গভীর রাতেই কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ওই চার নেতা-মন্ত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রেসিডেন্সি জেলে। 

কিন্তু সোমবার ভোর পৌণে চারটা নাগাদ হঠাৎই অসুস্থতা বোধ করায় মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়-উভয়কেই এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। মদন মিত্র আছেন হাসপাতালের উডবার্ন ওয়ার্ডের ১০৩ নম্বর কেবিনে এবং শোভনকে রাখা হয়েছে ১০৬ নম্বর কেবিনে। হাসপাতাল সূত্রে খবর দুইজনেরই অক্সিজেনের মাত্রা কম, তাই তাদেরকে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া হয়। 

জেলে যাওয়ার পথে ফিরহাদ হাকিম বলেন ‘বিচার ব্যবস্থার ওপর আমার পূর্ণ আস্থা আছে। বিচারবিভাগের মধ্যে দিয়েই আমরা ন্যায় বিচার পাবো।’ 

মদন মিত্র বলেন ‘আমরা সকলেই খারাপ, আর মুকুল, শুভেন্দু খুব ভাল তাই না!’
শোভন জানান ‘আমি ডাকাত নই। আগেও বলেছি, ফের বলছি, কোনও অন্যায় করিনি।’ 

এদিকে গ্রেফতারকৃত চার হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীই হাইকোর্টের তরফে স্থগিতাদেশ নির্দেশের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টে মামলা করেন তারা। তাদের সকলেরই বক্তব্য তাদের বাদ রেখেই হাইকোর্ট তার সিদ্ধান্ত জানায়। বুধবার তার শুনানি। 

অন্যদিকে চার নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে আরও কোমর বেঁধে নামল সিবিআই। হাইকোর্টে জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ আদায়ের পর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল তারা। একপক্ষ শুনানির সম্ভাবনা এড়াতে মঙ্গলবারই শীর্ষ আদালতে ক্যাভিয়েট দাখিল করল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। কারণ বুধবারই কলকাতা হাইকোর্টে এই মামলার শুনানি, সেখানে জামিন খারিজ হলে সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে অভিযুক্তরা শীর্ষ আদালতে যেতে পারে-এই অনুমান থেকেই শীর্ষ আদালতে ক্যাভিয়েট দাখিল করে সিবিআই। ফলে এই মামলায় সিবিআই’এর বক্তব্য না শুনে সুপ্রিম কোর্ট আর কোন রায় দিতে পারবে না। 

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই প্রকাশ্যে আসে নারদা স্টিং অপারেশনের ভিডিও। ওই ভিডিওতে ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখার্জি, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায় সহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ঘুষের রুপি নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপর থেকেই বিভিন্ন সময়ে অভিযুক্তদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি বিধানসভার নির্বাচন শেষ হওয়ার পরই রাজ্যের চার হেভিওয়েট নেতার গ্রেফতার নিয়ে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্যের রাজনীতি। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর