টাঙ্গাইল কান্দাপাড়া পতিতাপল্লীতে ফিরে আসা যৌনকর্মীদের পুনর্বাসনের আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসন। উচ্ছেদ হওয়া যৌনকর্মীরা বুধবার থেকে কান্দাপাড়া যৌনপল্লীতে ফিরতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার সকালে ফিরে আসা যৌনকর্মীরা টিন ও বাঁশ দিয়ে ঘর তৈরির কাজ শুরু করেছিল। এদিকে টাঙ্গাইল অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটি যৌনকর্মীরা ফিরে আসার প্রতিবাদে পাড়া-মহল্লায় মাইকিং করে হাজার হাজার মুসলি্ল নিয়ে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে সকালে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। পরে মুসলি্লরা পতিতাপল্লীর দিকে অগ্রসর হতে থাকে। শহরের আমঘাট রোডে পুলিশ তাদের গতিরোধ করে। এতে প্রতিরোধ কমিটি ৩ দিনের আল্টিমেটাম দেয় প্রশাসনকে।
গতকাল সকালে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুব হোসেন ও পুলিশ সুপার সালেহ মো. তানভীর পতিতাপল্লী পরির্দশনে যান এবং ফিরে আসা পতিতাদের পুনর্বাসন করা হবে মর্মে খোলা আকাশের নিচে না থাকতে বারণ করেন। এ সময় যৌনকর্মীরা সমস্বরে স্লোগান দিতে থাকে 'উচ্ছেদ চাই না, পুনর্বাসন চাই না, আমাদের অধিকার ফিরে চাই, আমাদের জায়গায় আমরা থাকতে চাই'। অধিকার আদায়ের জন্য কয়েকজন যৌনকর্মী শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে আত্দহত্যা করতে যায়। পরে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা পতিতাপল্লীর নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলবেন বলে ফিরে আসেন। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে শহরের কান্দাপাড়া পতিতাপল্লীকে ঘিরে বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলে অসামাজিক কার্যকলাপ প্রতিরোধ কমিটির আন্দোলনে ১২ জুলাই রমজান মাসে প্রায় ২০০ বছরের পুরানো কান্দাপাড়া যৌনপল্লীর সাড়ে ৮০০ যৌনকর্মীসহ প্রায় ২ হাজার নারী এক রাতেই তাদের আবাসন ছেড়ে চলে যায়। এরপর যৌনপল্লী এলাকা জনমানব শূন্য হয়ে পড়ে। যৌনকর্মীরা চলে যাওয়ার পর যৌনপল্লীর ঘর-বাড়ি ভাঙে ৫৬ জন বাড়ির মালিক ও সর্দারনীরা। সর্দারনী ও পতিতা মিলে প্রায় ৯০০ যৌনকর্মী এখানে যৌন পেশায় নিয়োজিত ছিল। প্রায় ২০০ বছর আগে লৌহজং নদীর তীরবর্তী কান্দাপাড়া নামক স্থানে এই যৌনপল্লী গড়ে উঠেছিল।