বুধবার, ১০ আগস্ট, ২০১৬ ০০:০০ টা

বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিদেশি ঋণ নয় হবে নিজস্ব অর্থায়নে

ছয় প্রকল্প অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদ্যুৎ প্রকল্পে বৈদেশিক ঋণ না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, নিজস্ব অর্থায়নে বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য আর বৈদেশিক ঋণ নিতে চাই না। তবে বৈদেশিক ঋণের বদলে নিজস্ব বিনিয়োগে দেশে বিদ্যুেকন্দ্র নির্মিত হলে ভালো হবে বলেও উল্লেখ করা হয়। এক্ষেত্রে যারা বিনিয়োগ করবেন তাদের জন্য জমি, রাস্তাসহ অবকাঠামো সুবিধা নিশ্চিত করার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া বন্যাকবলিত এলাকায় পানি সরে যাওয়ার পর ভাঙনরোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের অনুশাসন দিয়েছেন।

গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এমন পরামর্শ দেন। এ কথা জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, যেহেতু বিদ্যুৎ প্রকল্প লাভজনক, তাই  বৈদেশিক ঋণ নিয়ে বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপন না করার চেষ্টা করছি।

ডিএনডিসহ ছয় প্রকল্প অনুমোদন : ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-  ডেমরা) এলাকার পানি নিষ্কাশনসহ ৬ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮১৭  কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ১ হাজার ৮০২ কোটি ৬৮ লাখ এবং সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা জোগান দেওয়া হবে। রাজধানীর  শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব তারিক-উল ইসলাম। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ডিএনডি এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৫৮ কোটি ২০ লাখ টাকা। এ এলাকায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ বসবাস করেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা জলাবদ্ধতার কারণে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তারা উপকৃত হবেন। এই প্রকল্পের আওতায় ডিএনডি এলাকায় নতুন পাম্পসহ পাম্প স্টেশন ও পাম্পিং প্লান্ট স্থাপন, বর্তমান পাম্প স্টেশন পুনর্বাসন, সেচখাল নিষ্কাশন, খাল পুনঃখনন এবং ব্রিজ ও কালভার্ট নির্মাণের মাধ্যমে নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। এ ছাড়া এলাকার জনগণের স্বাভাবিক জীবনমান নিশ্চিতকরণ অর্থাৎ আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত মান উন্নয়ন এবং প্রকল্প এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, গ্রামের অর্থনীতি চাঙ্গা থাকলে দেশের অর্থনীতি ভালো থাকবে। গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের কারণে  দেশে আজ উৎপাদিত ফসলের চাহিদা ও সরবরাহের মধ্যে অসামঞ্জস্য দূর হয়েছে। প্রান্তিক কৃষকের জন্য সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে  সহজশর্তে  ঋণ দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে ৭৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রান্তিক এবং ক্ষুদ্র কৃষকদের শস্য সংগ্রহ পরবর্তী সহযোগিতার মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ শীর্ষক একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রান্তিক কৃষকদের জন্য অধিকতর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, দেশের সাধারণ মানুষের জীবনমান অধিকতর উন্নয়নের বিষয়টি আরও বেশি করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ভাবতে হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বন্যাকবলিত এলাকায় পানি সরে যাওয়ার পর ভাঙনরোধে পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের অনুশাসন দিয়েছেন। অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে-ফরিদপুর জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২৫ কোটি টাকা। প্রান্তিক এবং ক্ষুদ্র কৃষদের শস্য সংগ্রহ পরবর্তী সহযোগীদের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্প। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম জেলার উপকূলীয় পতেঙ্গা, আনোয়ারা এবং পটিয়ায় পুনর্বাসন প্রকল্প। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এ ছাড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ভোমরা স্থলবন্দর সংযোগসহ সাতক্ষীরা শহর বাইপাস সড়ক নির্মাণ প্রকল্প। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১৭৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ফেনী জেলার সোনাগাজীতে ১০০  মেগাওয়াট সৌর ও ১০০ মেগাওয়াট বায়ুচালিত বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১০২ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর