সোমবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
প্রেম প্রত্যাখ্যান

এবার বরিশালে কিশোরীকে কোপাল বখাটে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল নগরীর কলাপট্টি এলাকায় মুনিয়া আক্তার নামে এক কিশোরীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেছে বখাটে মোহাম্মদ মনির হোসেন। প্রেম প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গতকাল দুপুর ২টার দিকে এ কাণ্ড করা হয়। 

আহত মুনিয়া নগরীর ৯ নম্বর ওয়ার্ডের রসুল চরের বাসিন্দা স্ব-মিল শ্রমিক হেলাল মুন্সী এবং গৃহকর্মীর কাজ করা শাহানারা বেগম দম্পতির মেয়ে। সে নগরীর পুরান কয়লাঘাট এলাকার বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী কোম্পানি এমইপির একজন শ্রমিক। মুনিয়া নগরীর মমতাজ মজিদুন্নেছা মাধ্যমিক বালিকা  বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। অভাব-অনটনের সংসারে পিতা-মাতাকে সহায়তার জন্য সাত মাস আগে পড়াশোনা বন্ধ রেখে এমইপি কোম্পানিতে শ্রমিকের চাকরি নেয় মুনিয়া। অন্যদিকে হামলাকারী মনির কলাপট্টি এলাকার মো. অহিদুর রহমানের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে মুনিয়া ও তার সহকর্মী মালা রসুলপুর চর থেকে এমইপি ফ্যাক্টরিতে যাচ্ছিল। চর সংলগ্ন খেয়া পার হয়ে পশ্চিমপাড়ে কলাপট্টি অতিক্রম করার সময় মুনিয়াকে ডাক দেয় বখাটে মনির। মালা আক্তার জানিয়েছে, ডাকে সাড়া না দেওয়ায় মনির খড়ি দিয়ে মুনিয়াকে পিটিয়ে আহত করে। একপর্যায়ে এক ডাব বিক্রেতার একটি ধারালো দা ছিনিয়ে নিয়ে মুনিয়ার ডান পায়ে ২টি, বাম পায়ে একটি এবং ডান হাতে একটি কোপ দেয়। বখাটেরা মালাকেও একটি ঘরে আটকে রাখে। আহত মুনিয়া জানায়, কলাপট্টির বখাটে মনির বিবাহিত ও সন্তানের জনক। সে দীর্ঘদিন ধরে তাকে প্রেম প্রস্তাব করে আসছিল। তার প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় গতকাল ফ্যাক্টরিতে যাওয়ার পথে তাকে কুপিয়ে আহত করে মনির ও তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় মনিরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় মুনিয়া। রসুলপুর চরের বাসিন্দা কবির ঢালী জানান, বখাটে মনির একজন মাদকাসক্ত। সে দীর্ঘদিন ধরে মুনিয়াকে পথেঘাটে উত্ত্যক্ত করে আসছে। এ নিয়ে এক বছর আগে স্থানীয়ভাবে শালিস বৈঠক করে মনিরকে জুতাপেটাও করা হয়। কিন্তু তারপরও মুনিয়াকে পথেঘাটে উত্ত্যক্ত করে আসছে সে। মুনিয়াকে শেরে-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক ডা. এস এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, মুনিয়ার দুই পায়ে এবং ডান হাতে ধারালো অস্ত্রের ক্ষত রয়েছে। তার চিকিৎসা চলছে। তবে সে আশঙ্কামুক্ত। এদিকে মুনিয়াকে কুপিয়ে আহত করার প্রায় ঘণ্টাখানেক পর অভিযুক্ত মনির স্বেচ্ছায় কোতোয়ালি থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে। হামলার কথা স্বীকার করে সে দাবি করে, মুনিয়া তার সঙ্গে প্রেমের অভিনয় করে অনেক টাকা-পয়সা নিয়েছে। এখন সে তাকে পাশ কাটিয়ে আরেক ছেলেকে বিয়ে করতে চাইছে। এই আক্রোশে সে মুনিয়াকে কুপিয়ে আহত করেছে। মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার এস এম রুহুল আমিন বলেন, অভিযুক্ত মনির থানায় গিয়ে নিজেকে ধরা দেয় এবং সে মুনিয়াকে কুপিয়ে আহত করার কথা স্বীকার করে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে প্রচলতি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর