বৃহস্পতিবার, ৪ জানুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

শেষ হয়নি শিক্ষক আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেষ হয়নি শিক্ষক আন্দোলন

টানা অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন অনেক শিক্ষক-কর্মচারী —বাংলাদেশ প্রতিদিন

এমপিওভুক্তির দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো গতকাল আমরণ অনশন পালন করেছেন স্বীকৃতিপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষকরা। এ পর্যন্ত অনশনে মোট ৮৭ জন শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়েছেন বলে দাবি করেছে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশন। সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির সুনির্দিষ্ট সময় ঘোষণার দাবি করে এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষকনেতারা। এমপিওভুক্তির ব্যাপারে নিশ্চিত না হয়ে তারা বাড়ি ফিরে যাবেন না বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের           সাধারণ সম্পাদক ড. বিনয়ভূষণ রায়, ঠাকুরগাঁওয়ের শিক্ষক তসলিম উদ্দিন, পিরোজপুরের আবদুুস সালাম, পটুয়াখালীর হেমায়েত উদ্দিন, সাতক্ষীরার আবদুস সালাম, ভোলার ফজলুল হক ফিরোজ, রাজশাহীর শামসুল হক, সাতক্ষীরার জাহাঙ্গীর আলমসহ অন্যরা গতকাল অসুস্থ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অনেকে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে এসে পুনরায় অনশনে যোগ দিয়েছেন। আমরণ অনশন কর্মসূচিতে সমর্থন জানিয়ে গতকাল শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সুশীলসমাজের নেতা এ আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানান। তাদের মধ্যে রয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহাঙ্গীর হোসেন (অব.), বাসদ নেতা রাজেকুজ্জামান রতন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম রনি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মো. ইমরান হাবিব প্রমুখ। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অনশনস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, অনশনে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ শিক্ষকই ফুটপাথ ও প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তার একটি অংশে শুয়ে আছেন। কয়েকজন স্যালাইন নিয়ে শুয়ে আছেন। ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মাহমুদুন্নবীকেও স্যালাইন নিয়ে অনশন পালন করতে দেখা যায়। তিনি জানান, জীবন গেলেও দাবি পূরণ ছাড়া এখান থেকে যাবেন না। তিনি বলেন, ‘ন্যায্য দাবিতে খোলা আকাশের নিচে শীতের মধ্যে আমরণ অনশন করে যাচ্ছি। অনেক শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তবুও সরকার আমাদের দিকে তাকাচ্ছে না। শিক্ষামন্ত্রী আমাদের এখানে আসায় আমরা তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছি। কিন্তু তার বক্তব্য সুস্পষ্ট না হওয়ায় অনশনরত শিক্ষকরা তার আশ্বাস প্রত্যাখ্যান করেছেন। আমরা চাই সরকার অতি দ্রুত সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করবে। অন্যথায় আমরণ অনশন চালিয়ে যাব।’

সাধারণ সম্পাদক বিনয়ভূষণ রায় হাসপাতালে যাওয়ার আগে সকালে বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঘোষণা এলেই কেবল অনশন ভাঙা হবে। শিক্ষকনেতারা বলেন, সুনির্দিষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। তাদের কোনো ক্ষতিসাধন হলে এর দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। তারা বলেন, এর আগেও একাধিকবার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। নীতিমালার কথা বলে আমাদের রাজপথছাড়া করা হয়েছে। এসব নীতিমালায় আমরা বিশ্বাসী নই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত বাড়ি না ফেরার ঘোষণা তাদের। এমপিওভুক্তির দাবিতে ২৬ ডিসেম্বর থেকে টানা পাঁচ দিন অবস্থান কর্মসূচি শেষে রবিবার থেকে আমরণ অনশন পালন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর