মঙ্গলবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগে প্রার্থিতার সারি বিএনপিতেও একাধিক প্রার্থী

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

আওয়ামী লীগে প্রার্থিতার সারি বিএনপিতেও একাধিক প্রার্থী

সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন। সরাইল উপজেলায় প্রায় দুই লাখ ও আশুগঞ্জে প্রায় এক লাখ ভোটার রয়েছে। যে কারণে কোন উপজেলা থেকে বড় দলগুলো প্রার্থী মনোনয়ন দেয় তা নিয়ে স্থানীয়ভাবে আলোচনা আছে। এলাকা ইজম বেশ কাজ করে এই আসনে।

 আওয়ামী লীগের প্রার্থীর তালিকা বেশ দীর্ঘ। বিএনপি’র একাধিক প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন ।  জাতীয় পার্টি থেকে বর্তমান সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা একমাত্র প্রার্থী। ইসলামী ঐক্যজোট এ আসনে প্রার্থী দিবে। প্রার্থী আছে জাসদেরও (আম্বিয়া-প্রধান)। নির্বাচনের সময় কাছাকাছি চলে আসায় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা প্রচারণা বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রার্থীদের ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে দুই উপজেলার বিভিন্ন সড়ক, বাজারসহ বিভিন্ন স্থান। এছাড়া ধর্মীয় উৎসবকে সামনে রেখে ভোটারদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ব্যানার পোস্টার টানানো হয়েছে। মনোনয়নকে কেন্দ  করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে রয়েছে দলীয় বিভক্তি। বিশেষ করে সরাইল আওয়ামী লীগের কোন্দল প্রবল।  ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও সিনিয়র সহ-সভাপতি এ কে এম ইকবাল আজাদ নিজ দলের লোকজনের হাতে নৃশংসভাবে খুন হওয়ার পর সেখানে দলটি অস্বিত্ব সংকটে পড়ে। আর এ সুযোগটি কাজে লাগায় জাতীয় পার্টি। যদিও জাতীয় পার্টি সেখানে তেমন সুদৃঢ় অবস্থান গড়ে তুলতে পারেনি। নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় আলীগের প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম আহবায়ক উম্মে ফাতেমা নাজমা আজাদ (শিউলী আজাদ)।  তখন জোটগত কারণে আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ায় তিনি নির্বাচন করতে পারেননি।এবারও তিনি মনোনয়ন চাইবেন। শিউলী আজাদ দলীয় কোন্দলে হত্যাকান্ডের শিকার সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি এ. কে. এম ইকবাল আজাদের স্ত্রী। আওয়ামী লীগের অন্যতম মনোনয়ন প্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি, আওয়ামী লীগের  কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু। তিনি সরাইল ও আশুগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক গণসংযোগ করছেন। তিনি দুই উপজেলায় হাট বাজার ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে উঠোন বৈঠক, পথ সভা, হাট সভা, মত বিনিময় ও বিভিন্ন জনসভায় বক্তব্য রাখছেন। তাকে নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মী ও সর্বস্তরের মানুষের ব্যাপক উচ্ছাস আছে। সাবেক ছাত্রনেতা কামরুজ্জামান আনসারী দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি সপ্তাহে ৩-৪ দিন নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছেন। আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈন সরাইল ও আশুগঞ্জে নিয়মিত গণসংযোগ করছেন। সাবেক রাজস্ব কর্মকর্তা শফিকুর রহমান সাফি ইতিমধ্যেই নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া মনোনয়ন চাইতে পারেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ লীগ নেতা আবদুল হান্নান রতন, সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফরহাদ হোসেন মাক্কি, সাবেক যুগ্ন সচিব এম. ইসহাক ভুইয়া, আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক মো. ছফিউল্লাহ, আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল হালিম, নাজমুল ইসলাম ও আশরাফ উদ্দিন মন্তু। স্থানীয় জনগণের মতে, দলীয় ঐক্য না থাকলে আসনটি আওয়ামী লীগের পক্ষে পুনরুদ্ধার সম্ভব না-ও হতে পারে। স্থানীয়ভাবে কথা বলে জানা যায়, আসনটি মূলত বিএনপি’র ঘাঁটি। দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া এ আসন থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবারও তিনি প্রার্থী হবেন বলে বেশ আলোচনা আছে। সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ার গণসংযোগ করছেন। তিনি বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রামে মাঠে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি এস.এন. তরুণ দে গত ৪-৫ বছর ধরে এলাকায় গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।  এছাড়া বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ মোহাম্মদ শামীম, সরাইল উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান প্রার্থী হতে পারেন। ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী দলটির ভাইস চেয়ারম্যান মুফতি মো. আবুল হাসনাত আমিনী। তার পিতা প্রয়াত মুফতি মো. ফজলুল হক আমিনী এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। আওয়ামী লীগের সঙ্গে ইসলামী ঐক্যজোটের জোট হলে এ আসন থেকে তিনি মনোনয়ন পাবেন।  জাসদ (আম্বিয়া-প্রধান) প্রার্থী হিসেবে এ আসনের জন্য প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন দলটির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাসদ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি হোসাইন আহমেদ তফসির।

সর্বশেষ খবর