সোমবার, ৩০ মার্চ, ২০২০ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

ডুয়েটের তিন গবেষকের করোনা প্রতিরোধের কৌশল আবিষ্কার

খায়রুল ইসলাম, গাজীপুর

ডুয়েটের তিন গবেষকের করোনা প্রতিরোধের কৌশল আবিষ্কার

ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) তিন অধ্যাপক করোনাভাইরাস প্রতিরোধের কৌশল আবিষ্কার করেছেন। তারা হলেন- যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুস সাহিদ ও কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল কাশেম। ডুয়েটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী জানান, তারা এই ভাইরাসের বিভিন্ন প্রোটিন পর্যবেক্ষণ করে তাদের প্রকৃতি ও নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করেন। এই প্রোটিনগুলো পর্যবেক্ষণ করে তারা দেখেন যে, এগুলোর মধ্যে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান রয়েছে, যা শ্বাসনালিসহ মানবদেহের ক্ষতি করতে সক্ষম। এমনকি মানুষের মৃত্যুর কারণও হতে পারে। এসব রাসায়নিক উপাদান নিবিড়ভাবে পরীক্ষা ও অনুসন্ধান করে তারা দেখতে পান ভাইরাসের মধ্যে বিভিন্ন রাসায়নিক গ্রুপ রয়েছে। তারা দেখতে পান, এই রাসায়নিক গ্রুপের উপাদানগুলো অকার্যকর ও নিষ্ক্রিয় করতে অন্যান্য রাসায়নিক গ্রুপের প্রভাব রয়েছে। এই অবস্থায় তারা দেশীয় ও সহজলভ্য রাসায়নিক গ্রুপের বিভিন্ন উৎস নিয়ে পরীক্ষা করতে থাকেন। এটি করতে গিয়ে তারা দেখেন যে, আমাদের দেশের বিভিন্ন উদ্ভিদের মধ্যে এই উপাদানগুলো বিদ্যমান। যা একটি মেকানিজম অনুসরণ করে করোনাভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে পারে। তবে সেটিকে ওষুধ বা প্রতিষেধকে রূপান্তর করতে মাইক্রোবায়োলোজি ও ফার্মাসিস্ট বিশেষজ্ঞদের কাজ করতে হবে ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এর সুফল তাদের আনতে হবে। পরবর্তীতে এসব উদ্ভিদ প্রথমে এক্সট্র্যাক্ট করা হয় ও স্ট্রাকচারাল প্রকৃতি বিশ্লেষণ করেন। এই গবেষক দল তাদের গবেষণা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। তারা প্রাথমিকভাবে উদ্ভিজ্জ উৎসের মধ্যে কেমিক্যাল গ্রুপ ব্যবহার করেছেন, যা করোনাভাইরাসের খারাপ প্রোটিনগুলোর ওপর প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম। এই গবেষণার খুঁটিনাটি বিভিন্ন দিক ও পরীক্ষাগারের বিভিন্ন পরীক্ষা এখন চলছে। তারা মনে করেন এখান থেকে ওষুধ বা প্রতিষেধক তৈরির আগে পুষ্টিবিদদের মাধ্যমে এসব উদ্ভিজ্জ রাসায়নিক গ্রুপের একটি তালিকা সরকার প্রকাশ করতে পারে। এতে সাধারণ মানুষ এ খাদ্যগুলো তাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রেখে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধক্ষমতা গড়ে তুলতে পারবেন। এছাড়া ইলেকট্রো-ইস্পান পদ্ধতি ব্যবহার করে এই গবেষকরা এন্টি-ভাইরাল ন্যানো-মেমব্রেনে তৈরি করেছেন। এই ধারণা চিকিৎসকসহ সাধারণ মানুষের এন্টি-ভাইরাল পোশাক, গ্লাভস ও মাস্কসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপাদান তৈরিতে সহায়তা করবে। ইতিমধ্যে গবেষক দলটি তাদের গবেষণা ফলাফল আন্তর্জাতিক জার্নালে সাবমিট করেছেন। তারা আশাবাদী, তাদের এই পরিবেশ ও মানববান্ধব আবিষ্কার বাংলাদেশসহ পৃথিবীর মানুষের সুরক্ষা ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করবে।

সর্বশেষ খবর