বুধবার, ১৯ আগস্ট, ২০২০ ০০:০০ টা

গতি বেড়েছে মেট্রোরেলের কাজে

লাইন-৬ এ চলছে রেল ট্র্যাক বসানো ও স্টেশন নির্মাণের কাজ, টানা হচ্ছে বৈদ্যুতিক লাইন

নিজামুল হক বিপুল

গতি বেড়েছে মেট্রোরেলের কাজে

দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে মেট্টোরেলের কাজ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

করোনাভাইরাসের কারণে সাময়িক স্থবির হয়ে পড়া বহুল প্রত্যাশিত দেশের প্রথম মেট্রোরেলের (লাইন-৬) নির্মাণ কাজে আবারও গতি ফিরে এসেছে। প্রকল্পের মোট আটটি প্যাকেজের মধ্যে পাঁচটি প্যাকেজের কাজ এখন পুরোদমে চলছে। দুটো প্যাকেজের কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে এই প্রকল্পের বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন, স্টেশন নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ দ্রুত গতিতে চলছে।

মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আশা করছি, খুব শিগগিরই সবগুলো প্রকল্পের কাজ পুরোদমে শুরু হবে। প্রত্যাশিত সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ২০২২ সালের ডিসেম্বরের আগেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

মেট্রোরেল প্রকল্প লাইন-৬ সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পের দিয়াবাড়ী থেকে শুরু করে প্রথমভাগে ১১ দশমিক ৭৬ কিলোমিটার লাইনের মধ্যে ১০ কিলোমিটারেরও বেশি অংশে ভায়াডাক্ট স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। এই অংশে এখন দ্রুত গতিতে রেল ট্র্যাক বসানোর কাজ চলছে। এর পাশাপাশি মেট্রোরেল পরিচালনার জন্য বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপনের কাজও দ্রুত গতিতে চলছে। মেট্রোরেলের জন্য টঙ্গীতে নির্মিত সাব-স্টেশন থেকে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বৈদ্যুতিক লাইন টেনে আনা হচ্ছে দিয়াবাড়ীতে অবস্থিত মেট্রোরেল ডিপোতে। একই সঙ্গে পুরো মেট্রোরেলের লাইনজুড়ে একইভাবে বৈদ্যুতিক লাইন টানা হচ্ছে। সূত্র জানায়, বর্তমানে এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের চারটি স্টেশনের নির্মাণকাজ চলছে। এগুলো হচ্ছে দিয়াবাড়ীতে উত্তরা (উত্তর), উত্তরা (দক্ষিণ), উত্তরা (পূর্ব) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন। এর মধ্যে উত্তরার তিনটি স্টেশনের উপরিভাগের নির্মাণকাজ চলছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এই তিনটি স্টেশনের কাজ শতভাগ শেষ হয়ে যাবে। এর পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে স্টেশন নির্মাণের কাজ চলছে। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার এই প্রকল্পের দুই প্যাকেজের দৃশ্যমান কাজ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত অংশে দুটি প্যাকেজের কাজই পেয়েছে জাপানি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এখানে সব প্রকৌশলীও জাপানি। করোনাভাইরাসের কারণে জাপানিরা নিজ দেশে চলে যাওয়ায় এই দুই প্যাকেজের দৃশ্যমান কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন ছিদ্দিক গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দুটি প্যাকেজে পুরোদমে কাজ করা যাচ্ছে না। আশা করছি খুব শিগগিরই এই দুটি প্যাকেজের কাজ শুরু হবে। ইতিমধ্যে জাপানি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও তাদের প্রকৌশলীদের বাংলাদেশে আসার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে চিঠি লেখা হয়েছে। তিনি জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে জাপানিরা অন্তত বিশ্বের ৩২টি দেশ থেকে তাদের লোকজনকে দেশে ফিরিয়ে নিয়েছে। তাদের লোকজনের যাতায়াতের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ফলে কিছুটা সংকট তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, আশা করছি দ্রুত এই সংকট কেটে যাবে এবং জাপানিরা এসে কাজ শুরু করবে।

এদিকে এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পের জন্য জাপানে পাঁচ সেট ট্রেন তৈরির কাজ চলছে। ইতিমধ্যে এক সেট তৈরি হয়ে গেছে। বাকি চার সেট তৈরির কাজ চলছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে এই ট্রেনগুলো দেশে আসার কথা রয়েছে। সবকিছু সচল হলে খুব শিগগিরই কোচগুলো দেশে চলে আসবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।

সর্বশেষ খবর