শনিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা
জরিপ রিপোর্ট

বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরবে দ্রুত, কর্মসংস্থান হবে ধীরে

প্রতিদিন ডেস্ক

করোনাভাইরাস মহামারীর কবলে থমকে যাওয়া বৈশ্বিক অর্থনীতি এ বছর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াতে প্রস্তুত। তবে অর্থনীতির গতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে কর্মসংস্থান বাড়বে না বলে সতর্ক করেছেন অর্থনীতিবিদরা। বিভিন্ন দেশের ৫০০ অর্থনীতিবিদ নিয়ে পরিচালিত জরিপের ফলের ভিত্তিতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, বড় অর্থনীতিগুলোর শক্তিশালী অবস্থানের ওপর নির্ভর করে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর গতি ১৯৭০ এর দশকের পর সবচেয়ে দ্রুত হতে পারে। এমন প্রত্যাশার মূলে রয়েছে টিকাচালিত পুনরুদ্ধার কার্যক্রম, বিপুল পরিমাণ তারল্যের জোগান, অপ্রত্যাশিত বাজেট সহায়তা, প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া পদক্ষেপ এবং গতিশীলতা বজায় রাখতে পরিস্থিতি অনুযায়ী অর্থনৈতিক কার্যক্রমের খাপ খাওয়ানোর ধারাবাহিকতা।

মার্চজুড়ে চলা রয়টার্সের জরিপে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বাড়লে অর্থনীতির গতি হারানোর শঙ্কার প্রশ্নে বিভক্ত মত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে ২০২১ সালে বিশ্বের ৪৪টি দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হতে যাচ্ছে এ বিষয়ে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ৫৫ শতাংশই একমত। এই হার তিন মাস আগে পরিচালিত  জরিপের চেয়ে বেশি। মূলত যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির নেতৃত্বে বৈশ্বিক অর্থনীতির এই পুনরুদ্ধার গতি পেতে যাচ্ছে এবং এ বছর চীনের প্রবৃদ্ধির হারও মহামারী-পূর্ব পর্যায়ে ফিরে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এইচএসবিসি ব্যাংকের গ্লোবাল চিফ ইকোনমিস্ট জ্যানেট হেনরি উল্লেখ করেছেন, ‘একটি সংহতিপূর্ণ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ বছর জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারে আমাদের পর্যবেক্ষণে থাকা প্রতিটি অর্থনীতিই একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতিফলন দেখাবে।’

বিধ্বংসী কভিড-১৯ মহামারী গত বছর বৈশ্বিক অর্থনীতিকে এর চেয়ে ভয়াবহ মন্দার কবলে ফেলে। তবে এই জরিপের ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে, একটি তড়িৎ পুনরুদ্ধারও এ বছরই দেখা যাবে। বৈশ্বিক অর্থনীতির এই ঘুরে দাঁড়ানোর প্রবৃদ্ধির হার গড়ে ৫ দশমিক ৯ শতাংশ হতে পারে, যা ১৯৭০ এর দশকের পর সবচেয়ে গতিময়।

রয়টার্সের জরিপে প্রাপ্ত প্রবৃদ্ধির হার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রাক্কলিত ৬ শতাংশের চেয়ে সামান্য কম হলেও পর্যবেক্ষণে থাকা ৭৪টি অর্থনীতির মধ্যে ৩০ শতাংশের প্রবৃদ্ধি আইএমএফের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি হবে বলে এই জরিপে আশা করা হচ্ছে।

তবে অর্থনীতির গতি বাড়লেও সমানতালে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে না বলেই ধারণা করছেন অর্থনীতিবিদরা। বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত অর্থনীতির ওপর পরিচালিত এই জরিপে চলতি বছর বা পরের বছর বেকারত্বের হার মহামারী-পূর্ব পর্যায়ে নেমে আসবে না বলেই পূর্বাভাস মিলেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে গত বছরের এপ্রিলের তুলনায় এ বছর কর্মসংস্থানের প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা ভালো দেখা গেলেও এখনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে যে, কভিড-১৯ মহামারীর কারণে অনেককেই কর্মহীন থাকতে হতে পারে। চলাচলের বিধিনিষেধের কারণে অর্থনীতির অনেক খাতেই এখনো প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়ে আছে এবং সহসাই এসব খাত চাঙা হবে বলেও আশাবাদী নন অর্থনীতিবিদরা।

সর্বশেষ খবর