বৃহস্পতিবার, ৩ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

ডা. সাবিরা হত্যায় অবশেষে স্বজনের মামলা

পাশের ভাড়াটিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর গ্রিন লাইফ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কাজী সাবিরা রহমান লিপির রক্তাক্ত ও দগ্ধ লাশ উদ্ধারের ৩৫ ঘণ্টা পর কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১২টায় অজ্ঞাত আসামি উল্লেখ করে মামলাটি করেন ডা. সাবিবার মামাতো ভাই রেজাউল হাসান মজুমদার জুয়েল (মামলা নম্বর ১/৯৪)।

এদিকে খুনের রহস্য এখনো উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। তবে পাশের রুমের ভাড়াটিয়া তরুণী কানিজ সুবর্ণাকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। মামলার বাদীও সন্দেহ করছেন ওই তরুণীকে। উল্লেখ্য, গত ৩১ মে কলাবাগানের ফার্স্ট লেনের ৫০/১ নম্বর বাড়ির তিন তলার বাসা থেকে ওই চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি গ্রিন লাইফ হাসপাতালের কনসালটেন্ট (সনোলজিস্ট) ছিলেন।

 তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডা. সাবিরা হত্যার ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চারজনকে হেফাজতে নিয়েছে ডিবি পুলিশ। এর মধ্যে আছেন সাবলেটে থাকা শিক্ষার্থী, তার এক বন্ধু, গৃহপরিচারিকা ও বাড়ির দারোয়ান রমজান। ঘটনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরে আরও ৬/৭ জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ডিবি পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) শাহেন শাহ মাহমুদ জানান, তারা জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছেন। তবে রহস্য এখনো উদঘাটন করতে পারেননি। তদন্তে অনেকগুলো সূত্র ধরে সামনে এগোচ্ছেন। এদিকে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ডা. সাবিরার প্রথম স্বামী ২০০৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। এরপর ২০০৫ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করেন সাবিরা। উভয় পক্ষের এক ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে তার। সাবিরা পরিবারের সঙ্গে স্থায়ীভাবে বাস করতেন রাজধানীর গ্রিন রোডের একটি অ্যাপার্টমেন্টে। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে এ বছরের জানুয়ারি মাস থেকে কলাবাগান প্রথম লেনের ৫০/১ তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। ওই বাসায় তিন রুম, এর একটিতে নিজে থাকতেন। অন্য দুটি রুমে সাবলেট হিসেবে দুই তরুণীকে দিয়েছিলেন। ভাড়া দেওয়া দুই রুমের একটিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করা একজন তরুণী থাকছিলেন (অর্থাৎ কানিজ সুবর্ণা)। তিনি মডেলিংয়ের পাশাপাশি দারাজ অনলাইন শপিং সাইটেও কাজ করেন। ওই মডেল ফেব্রুয়ারি মাসে সাবিরার কাছ থেকে বাসা ভাড়া নেন। সাবলেটে অপর রুমের আরেক তরুণী রোজার ঈদের পর থেকে তার গ্রামের বাড়িতে রয়েছেন। ঘটনা সম্পর্কে বাদী রেজাউল এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ৩১ মে দুপুর ১২টার দিকে তিনি তার ফুফুর কাছ থেকে মোবাইলফোনে সাবিরার মৃত্যুর খবরটি শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন, তার বোনের লাশ বিছানার ওপর উপুড় করে ফেলা আছে। শরীরের বিভিন্ন অংশ পোড়া ও জায়গায় জায়গায় ফোসকা পড়া। তার পিঠের নিচের অংশে পাশাপাশি চারটি ধারালো অস্ত্রের ক্ষত। বাম চোয়ালের নিচে গলার বাম দিকে ধারালো অস্ত্রের দুটি গভীর আঘাত, যা জবাই করার মতো। বিছানার বেশ কিছুটা অংশ পোড়া ও মেঝেতে ছাই ছড়িয়ে ছিল। হত্যার পর ঘটনার আলামত নষ্ট ও ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আগুন লাগানো হয়েছে বলে সন্দেহ তার। ঘটনার সময় শুধু সাবলেটে মডেল তরুণী বাসায় অবস্থান করছিলেন বলে অভিযোগ রেজাউলের। তাই সন্দেহভাজন হিসেবে এজাহারে ওই তরুণীর নাম উল্লেখ করেছেন তিনি।

সর্বশেষ খবর