মঙ্গলবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা
উখিয়ার ক্যাম্পে ছয় খুন

সাধারণ রোহিঙ্গারা এখনো উৎকণ্ঠায়

আয়ুবুল ইসলাম, কক্সবাজার

সাধারণ রোহিঙ্গারা এখনো উৎকণ্ঠায়

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প-১৮ এর এইচ-৫২ ব্লকের দারুল উলুম নাদওয়াতুল উলামা ইসলামিয়া মাদরাসায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার পর ক্যাম্পের সব জায়গায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাধারণ রোহিঙ্গারা নতুন করে তাদের ওপর হামলার আশঙ্কা করছেন। অনেকে ভয়ে ক্যাম্প ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে যেতে চাচ্ছেন। ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা জানান, ওইদিনের ঘটনাটি আরসার শাখা সংগঠন উলামা কাউন্সিলের মদদে হয়েছে। তারা মাদরাসাটির নিয়ন্ত্রণ নিতে না পারে ক্ষুব্ধ ছিল। এ ছাড়া এই ব্লকের লোকজন মুহিবুল্লাহ হত্যার পর সন্ত্রাসীদের ধরতে পুলিশকে সহায়তা দিয়েছিল বলেও আরসার ক্ষোভ তাদের ওপর। তাই তারা যে কোনো মুহুর্তে আরও বড় ধরনের হামলার মাধ্যমে প্রতিশোধ নিতে পারে। গতকাল সরেজমিন, বালুখালী ক্যাম্প-১৮ এর এইচ-৫২ ব্লকে গিয়ে নিহত পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিবারের নিহত সদস্যরা ছিল একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাই তারা তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। নিহত মোহাম্মদ আমিনের বৃদ্ধ বাবা আবুল ফয়েজ (৭৮) বলেন, আমিন ১০ সদস্যের পরিবারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। পরিবারের বেশির ভাগ সদস্য নারী ও শিশু। এখন ঘর সামলানোর মতোও কেউ নেই। আমরা এখন কি করব ভেবে পাচ্ছি না। তার সন্তানগুলো এখনো শিশু। আমরা স্ত্রীসহ দুজন বৃদ্ধ এবং অসুস্থ। আমিন দিনমজুরের কাজ করে পরিবার সামলাত।

নিহত আমিনের মা লায়লা বেগম বলেন, মিয়ানমারে আমরা মগ ও সশস্ত্র বাহিনীর হামলার শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছি জীবনের নিরাপত্তার জন্য। কিন্তু এখানে এসে স্বজাতির হামলায় মরতে হবে তা কখনো ভাবিনি। আমার ছেলে মসজিদে আশ্রয় নিয়েও বাঁচতে পারেনি। সে ঘটনার কিছুক্ষণ আগে মাদরাসার টয়লেটে গিয়েছিল। ফিরে আসার পথে সন্ত্রাসীদের সামনে পড়ে যায়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, ক্যাম্পে ছয়জন রোহিঙ্গা নিহতের ঘটনায় ২৫ জনকে নামীয় ও ২৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে নিহত আজিজুল হকের বাবা নুরুল ইসলাম মামলা করেছেন। এখন পুলিশ আসামিদের ধরতে তৎপর রয়েছে।

৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) এ পর্যন্ত ১০ জনকে আটক করেছে। এদের মধ্যে পাঁচজন মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। বাকি পাঁচজন সন্দেহভাজন।

উখিয়া থানা পুলিশের ওসি আহমেদ সঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। এখনো কিছু বলা যাচ্ছে না। আসামিদের রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর