বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

বিচারকের রায়ে সংসারে ফিরল ৪৫ দম্পতি

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

আদালতে যৌতুক, নির্যাতনসহ পারিবারিক নানা ঝামেলা নিয়ে নিজ নিজ স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন ৪৫ নারী। স্ত্রীকে নিয়ে শান্তিতে বসবাস করার শর্তে সাজা না দিয়ে সংসারের জোড়া লাগিয়ে দিলেন আদালত।

গতকাল দুপুরে সুনামগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা পৃথক ৪৫টি মামলায় এমন রায় দেন। রায় ঘোষণার পর দম্পতিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয় আদালতের পক্ষ থেকে।

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সদ্ভাব বজায় রাখা, যৌতুক দাবি ও অত্যাচার-নির্যাতন না করাসহ পাঁচটি শর্তে আসামিদের আপসে মুক্তি দেওয়া হয়। শর্ত ভাঙলে আবারও মামলা চালু হবে বলে সতর্ক করেন বিচারক।

আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, ৪৫টি পরিবারকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য এ রকম আদেশ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে বিচ্ছিন্ন দম্পতিরা সন্তানাদি ও পরিবার-পরিজন নিয়ে আগের মতো সংসার করতে পারবেন। বাবা ও মায়ের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমার কারণে এসব পরিবারের শিশুরা পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হচ্ছিল। দীর্ঘদিন ধরে মামলা চালাতে গিয়ে উভয় পরিবার আর্থিক ও মানসিক ক্ষতির মধ্যে পড়ে। এর প্রভাব এসে পড়েছে তাদের সন্তানদের ওপর। ফলে শিশু সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।

এদিকে আদালতের এমন ব্যতিক্রমী রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন দম্পতিরা। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ থেকে বেরিয়ে পরিবার ও সন্তানাদি নিয়ে নতুনভাবে বাঁচার সুযোগ পেয়ে খুশি তারা। দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের সেলিমা বেগম বলেন, ‘পারিবারিক বিরোধ, অশান্তি, নির্যাতনে আমার জীবন বিভীষিকাময় রূপ নিয়েছিল। স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করি। আদালত তাকে জেলে পাঠান। আদালতের হস্তক্ষেপে মামলা আপস হওয়ায় আমি খুশি। বাকিটা জীবন স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখে কাটাতে চাই।’ সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট নান্টু রায় বলেন, ‘আদালতের কাজ শুধু সাজা দেওয়া নয়, শান্তি দেওয়াও। যুগান্তকারী এ রায়ের ফলে ৪৫টি পরিবার রক্ষা পেয়েছে। দীর্ঘদিন মামলা চালিয়ে পরিবারগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে। মামলা আপস হওয়ায় তারা সংসারজীবনে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।’

সর্বশেষ খবর