রংপুরের পীরগাছার মোংলাকুটি গ্রামে মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার পর বাবা রশিদুল ইসলামের আত্মহত্যা চেষ্টার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল সকালে পীরগাছা থানায় নিহতের নানা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে মেয়েজামাই রশিদুলের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এ ঘটনায় রশিদুল ও তার স্ত্রী জেসমিন এবং মেয়ে সুমাইয়া রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে জেসমিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ রশিদুল মানসিক ভারসাম্যহীনতার কারণে নাকি জমি-জমা নিয়ে বিরোধে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে সকালে নিহত রফিয়া আক্তারের লাশ ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে বেশ কিছুদিন ধরে রশিদুল মানসিকভাবে বিপযর্স্ত ছিলেন। এছাড়া স্ত্রীর সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। তবে কি কারণে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটেছে এর প্রকৃত কারণ তদন্ত শেষে জানা যাবে বলে জানিয়েছেন রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান পলাশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালে পীরগাছা উপজেলার মোংলাকুটি গ্রামের কৃষক রশিদুল ইসলামের সঙ্গে জেসমিন আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে রাফিয়া (১১) ও সুমাইয়ার (৩) জন্ম হয়। পালক পিতা মৃত সিদ্দিক হোসেনের কাছে বড় হওয়া রশিদুল গত ১৫ দিন ধরে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন।
রবিবার রাতে নিজ বাড়িতে স্ত্রীর সঙ্গে কথা কাটাকাটির জেরে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা জেসমিন আক্তার, বড় মেয়ে রাফিয়া, ছোট মেয়ে সুমাইয়া ও দাদী ফাতেমা বেগমকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। এতে ঘটনাস্থলেই রাফিয়া মারা যায়। এ সময় রশিদুল তার নিজের গলায় আঘাত করে রক্তাক্ত করাসহ বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। চিৎকারের শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। বর্তমানে রশিদুল, তার স্ত্রী জেসমিন ও ছোট মেয়ে সুমাইয়া রংপুর মেডিকেলে ও রশিদুলের দাদী ফাতেমা বেগম পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুজ্জামান পলাশ বলেন, নিহত রাফিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি হাসপাতালের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে জানান, রশিদুলের রাতেই অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। স্ত্রী জেসমিন ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি এখনো বিপদমুক্ত নন। পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীনতা কিংবা জমিজমার কারণে এ হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় রশিদুলকে আসামি করে তার শ্বশুর মামলা করেছেন।
