মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

সহকর্মীর সঙ্গে অশোভন চ্যাটিং ইউএনওর, লঘু সাজা

নিজস্ব প্রতিবেদক

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) থাকার সময় অমিত চক্রবর্ত্তী সহকর্মী একজন নারী এসিল্যান্ডকে যৌন হয়রানি করেছিলেন। তদন্তে প্রমাণিত হওয়ার পর গত ১৩ অক্টোবর তাকে শাস্তি হিসেবে লঘুদণ্ড ‘তিরস্কার’ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। যৌন হয়রানির শাস্তি ‘তিরস্কার’ হওয়ায় প্রশাসনে নারী কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। তবে নাম প্রকাশ করে কেউই কথা বলতে রাজি হননি। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনে নারী কর্মকর্তাদের নানা ধরনের বিপত্তির মধ্যে কাজ করতে হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় এ ধরনের অপরাধ দিনদিনই বাড়ছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়- কুড়িগ্রামের চররাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিত চক্রবর্ত্তী ২০২১ সালের ২৫ জুলাই থেকে ৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সে সময় তার অধীন কর্মরত একজন সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। তার সঙ্গে ফেসবুক মেসেঞ্জারে অশোভন কথোপকথন, তার স্বামীর বদলি ও বাচ্চার রংপুরে থাকাসহ নানা বিষয়ে চাপ দেন। এমনকি তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও বডি স্প্রে কিনে দেওয়া, রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়ে কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন কথাবার্তা বলা, ফোনে ভারসাম্যহীন ও অসঙ্গতিপূর্ণ কথা বলা, কাজ না থাকলেও রাতে অফিসে বসিয়ে রাখা ও বন্ধের দিনে ফোন ওয়েটিংয়ে থাকা নিয়ে চাপ প্রয়োগ করার মতো শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ করার অভিযোগে ওঠে। তার বিরুদ্ধে এ মন্ত্রণালয়ে বিভাগীয় মামলা করা হয়। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি তার ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ করা হয়। ব্যক্তিগত শুনানিকালে সরকার পক্ষের নথি উপস্থাপনকারী কর্মকর্তা নীলফামারী জেলা প্রশাসনের উপ-পরিচালক (স্থানীয় সরকার) মো. আবদুর রহমান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অভিযোগ বিবরণীর বক্তব্য সমর্থন করে বলেন, একজন নারী জুনিয়র সহকর্মীর সঙ্গে এমন অশালীন ও দৃষ্টিকটু আচরণ কাক্সিক্ষত নয়। গত ২৭ সেপ্টেম্বর তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অভিযোগকারীর সঙ্গে ফেসবুক মেসেঞ্জারে অশোভনীয় কথোপকথন/চ্যাটিং করা এবং তার অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকে বডি স্প্রে কিনে দেওয়ার মাধ্যমে অভিযুক্ত কর্মকর্তা কর্তৃক অসদাচরণ সংঘটনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। এরপরও ‘সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮’ এর ৪(২) (ক) বিধি অনুযায়ী ‘তিরস্কার’ সূচক লঘুদণ্ড দেওয়া হলো বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর