বুধবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

প্রবৃদ্ধি টার্গেট কমাল সরকার

মানিক মুনতাসির

প্রবৃদ্ধি টার্গেট কমাল সরকার

আসছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৫১ হাজার কোটি টাকার বাজেটের প্রাথমিক আকার নির্ধারণ করেছে সরকার। নতুন এ বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হচ্ছে। যদিও বৈশ্বিক মন্দার কারণে চলতি ২০২২-২৩ বাজেটে ঘোষিত জিডিপি ৭ দশমিক ২ শতাংশ অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়ায় তা কমিয়ে ৭-এর নিচে পুনর্নির্ধারণ করা হচ্ছে। চলতি বাজেটের লক্ষ্য অর্জনে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। এ জন্য রাজস্ব আদায় বাড়াতে এনবিআরকে আরও কঠোর ও যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে গতকাল ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরমে অনুষ্ঠিত আর্থিক, মুদ্রা ও মুদ্রা বিনিময় হার-সংক্রান্ত সমন্বয় কাউন্সিল ও সম্পদ কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে এমন পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রতিবেদন উপস্থাপন করে অর্থ বিভাগ। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, ডলার সংকট, রপ্তানি আয়, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি,  কৃষি খাত, বাজেট বাস্তবায়ন, বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যহীনতাসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। এতে রাজস্ব আদায় বাড়াতে করদাতার সংখ্যা বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়। চলতি বাজেটে ৭ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন কঠিন হবে বলে মতামত দিয়ে এর লক্ষ্য ৭-এর নিচে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে মন্দা ও যুদ্ধের প্রভাব কেটে গেলে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে। ফলে আগামী অর্থবছর উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হবে। এ জন্য আসছে বছর জিডিপির টার্গেট ধরা হচ্ছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। জানা গেছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা। এতে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭ দশমিক ২ শতাংশ। এর আগের, অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি ১ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। বৈঠক সূত্র জানিয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক খাতে বেশ কয়েকটি ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। সরকারকে সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি ও রেমিট্যান্স প্রবাহ। এর পাশাপাশি মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা, বিশ্ববাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং রিজার্ভ কমে যাওয়াও দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিচ্ছে। এটি আগামী অর্থবছরও থাকবে বলে আশঙ্কা করা হয়। জানা গেছে, আগামী বছরও ডলার সংকট মোকাবিলা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বড় চ্যালেঞ্জ থাকবে। এসব চ্যালেঞ্জ দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে সংকট আরও প্রকট আকার ধারতে পারে বলে সতর্ক করেছেন অর্থনীতিবিদরা।

সর্বশেষ খবর