বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা
পদায়ন নীতিমালা জারি

ডিসি হতে কমপক্ষে দুই বছর মাঠে থাকতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

উপসচিব পদে পদোন্নতি পাওয়ার এক বছর পর জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে পদায়নের জন্য ফিট লিস্ট করা হবে। এই লিস্টে থাকা কর্মকর্তাদের উপপরিচালক স্থানীয় সরকার/অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক/জেলা পরিষদের সচিব/জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পৌরসভা এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার উভয় পদে মোট কমপক্ষে দুই বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। মাঠ পর্যায়ে কমপক্ষে পাঁচ বছরের কর্ম অভিজ্ঞতা ছাড়া প্রশাসন ক্যাডারের কর্মচারীদের মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতরে পদায়ন করা যাবে না। তবে প্রশাসনিক কারণে এ সময়সীমা শিথিল করা যাবে। এমন বিধান রেখে ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন কর্মচারীদের পদায়ন নীতিমালা-২০২২’ পরিপত্র আকারে জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। নীতিমালায় ডিসি, ইউএনও, এসিল্যান্ডসহ মাঠ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন কিছু শর্ত যুক্ত করা হয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের অতিরিক্ত সচিব বা যুগ্ম-সচিবদের মধ্য থেকে বিভাগীয় কমিশনার পদে পদায়ন করা হবে। বিভাগীয় কমিশনার পদে পদায়নের জন্য জেলা প্রশাসক পদে কর্ম অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। ডিসি পদে নিয়োগের জন্য কর্মকর্তাদের পূর্ববর্তী পাঁচ বছরের বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদনের রেকর্ড এবং পুরো চাকরি জীবনের শৃঙ্খলা প্রতিবেদন সন্তোষজনক হতে হবে। প্রকল্প ও ক্রয় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত জ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্পর্কে সম্যক ধারণা, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান এবং বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে। অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হতে হবে ম্যাজিস্ট্রেসি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিষয়ে।

বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মচারীদের মধ্য থেকে ইউএনও পদে পদায়ন করা হবে। ইউএনও পদে পদায়নের জন্য যোগ্য কর্মচারী বাছাই করে ফিট লিস্ট করা হবে। এতে যারা থাকবেন তাদের সিনিয়র স্কেলপ্রাপ্তি ও ন্যূনতম ছয় বছর চাকরিকাল পূর্ণ হতে হবে। সর্বশেষ পাঁচ বছরের বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন, সার্ভিস রেকর্ড ও শৃঙ্খলাজনিত প্রতিবেদন সন্তোষজনক হতে হবে। বিবেচনাধীন কর্মচারীদের চাকরিকালের সততা ও সুনাম বিবেচনা করা হবে। বিবেচনাধীন কর্মচারীর পাঁচ বছরের গোপনীয় অনুবেদনের গড় নম্বর ন্যূনতম ৮৫ শতাংশ হতে হবে। এ ছাড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে কমপক্ষে এক বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। কর্মচারীরা জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী বিবেচিত হবেন। সম্ভাব্য শূন্য পদের ভিত্তিতে ফিট লিস্ট করা হবে। ফিট লিস্টভুক্ত কর্মচারীদের মধ্য থেকে ইউএনও পদে পদায়ন করা হবে। ইউএনও হিসেবে কর্মকাল সাধারণত দুই বছর হবে। তবে বিশেষ প্রশাসনিক কারণ ছাড়া এক বা একাধিক কর্মস্থলে কর্মকাল তিন বছরের বেশি হবে না এবং কোনো কর্মস্থল থেকে এক বছরের আগে বদলি করা যাবে না। সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে কর্মরত ছিলেন এমন উপজেলায় পরবর্তী সময়ে ইউএনও পদে পদায়ন করা যাবে না। নিজ জেলা বা স্বামী/স্ত্রীর জেলায় ইউএনও পদে পদায়ন করা যাবে না।

এ ছাড়া চাকরির মেয়াদ তিন বছর পূর্তি, নির্ধারিত প্রশিক্ষণ সমাপ্তি ও চাকরি স্থায়ীকরণের পর যথাসম্ভব জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের সহকারী কমিশনারদের মধ্য থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে পদায়নের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হবে। সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কর্মকাল সাধারণত দুই বছর হবে।  সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে কোনো কর্মস্থলে এক বছর পার হওয়ার পর অন্য কর্মস্থলে বদলি করা যাবে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে প্রথম পদায়ন জেলা সদর ও মহানগর অধিভুক্ত এলাকার বাইরে এই নীতিমালায় উল্লিখিত ?‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণির উপজেলায় হবে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে এক বছর দায়িত্ব পালনের পর কর্মচারীদের দক্ষতা, সততা, জনসেবা প্রদানের মানসিকতা যাচাই করে ‘ক’ শ্রেণির উপজেলায় বা রাজস্ব সার্কেলে পদায়ন করা যাবে।

নতুন নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মচারীদের মাঠ প্রশাসন থেকে মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতরে পদায়নের ক্ষেত্রে যথাসম্ভব ব্যাচভিত্তিক জ্যেষ্ঠতা বিবেচনা করতে হবে। প্রশাসন ক্যাডারের সহকারী সচিব/সিনিয়র সহকারী সচিব/উপসচিব পদমর্যাদার কর্মচারীরা মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতরে কর্মরত থাকলে তাদের মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য যথাসম্ভব মাঠ প্রশাসনে পদায়ন করতে হবে। মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতরের পদে চাকরিকাল সাধারণত তিন বছর হবে। বিশেষ প্রশাসনিক কারণে তিন বছরের আগে অন্য মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দফতরে পদায়ন করা যাবে।

সর্বশেষ খবর