শিরোনাম
শনিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
কাজ শেষ ৭০ শতাংশ

ডিসেম্বরে চালু এক্সপ্রেসওয়ে জুনে পতেঙ্গা-নিমতলা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

ডিসেম্বরে চালু এক্সপ্রেসওয়ে জুনে পতেঙ্গা-নিমতলা

দুয়ার খুলবে চট্টগ্রামের স্বপ্নের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের। প্রাথমিকভাবে খুলে দেওয়া হবে পতেঙ্গা থেকে নিমতলা পর্যন্ত। ডিসেম্বরে চালু করা হবে মূল এক্সপ্রেসওয়ে। নেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি। আংশিক চালু হলেও সুফল মিলবে বঙ্গবন্ধু টানেলের। কমবে যানজট, ভোগান্তি। ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে ৭০ শতাংশ কাজ। নিরাপত্তা, নজরদারি, দুর্ঘটনা ও অপরাধ পর্যবেক্ষণে বসানো হবে ২০০ সিসি ক্যামেরা। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) ৪ হাজার ৩৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকায় পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটারের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি বাস্তবায়ন করছে। সরেজমিন দেখা যায়, বর্তমানে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিভিন্ন অংশে একযোগে কাজ চলছে। পতেঙ্গা, নিমতলা, বারিক বিল্ডিং, চৌমুহনী, আগ্রাবাদ, দেওয়ানহাট ও টাইগারপাস এলাকায় চলছে নির্মাণ, ঢালাই এবং সৌন্দর্যবর্ধন কাজ। একযোগে তিন শিফটে কাজ করছেন ২ হাজার ৫০০ শ্রমিক। শেষ হয়েছে ৩২০টি পিলার স্থাপনের কাজ। চলমান গতিতে কাজ চললে আগামী জুনে পতেঙ্গা থেকে নিমতলা এবং ডিসেম্বরে মূল এক্সেপ্রেসওয়ে চালু করার পরিকল্পনা আছে বলে জানা গেছে।

মোস্তফা হাকিম গ্রুপের পরিচালক তরুণ উদ্যোক্তা সারওয়ার আলম বলেন, এলিভেডেট এক্সপ্রেসওয়েটি চট্টগ্রামে যোগাযোগে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে। এখন দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ ও পর্যটকদের মূল সড়কে যাতায়াতে যানজটসহ নানা রকম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এক্সপ্রেসওয়েটি হলে এ সমস্যা আর থাকবে না। এখন যেহেতু ইকোনমিক জোন হচ্ছে, তাতে নগরের সঙ্গে বন্দরের যোগাযোগ বাড়বে। তখন সড়কে যানবাহন আরও বেড়ে যাবে। তাই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি চট্টগ্রামের জন্য অতি জরুরি ছিল। এলিভেডেট এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পরিচালক প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, বর্তমানে তিন শিফটে প্রায় ২ হাজার ৫০০ শ্রমিক কাজ করছেন। চলমান গতিতে কাজ চললে আগামী জুনে পতেঙ্গা থেকে নিমতলা এবং ডিসেম্বরে মূল এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পরিকল্পনা আছে। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে ৭০ শতাংশ কাজ। নির্মিত হয়েছে ৩২০টি পিলার। তিনি বলেন, রেলওয়ের সঙ্গে টাইগারপাস এলাকার জায়গা নিয়ে একটি জটিলতা ছিল। এ কারণে ওই এলাকায় কাজ করা যায়নি। গত সপ্তাহে এ নিয়ে রেলওয়ের সঙ্গে ১০ বছরের জন্য একটি চুক্তি হয়। ফলে এখন জায়গা নিয়ে আর কোনো জটিলতা থাকল না। এখন দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে নির্মাণকাজ।

জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরের প্রধান সড়ক পতেঙ্গা-বিমানবন্দর থেকে কালুরঘাট। কালুরঘাট থেকে বিমানবন্দর যেতে সময় লাগে দুই ঘণ্টা। যানজটে পড়লে আরও বেশি সময় লাগে। যানজটের কারণে বিমানযাত্রীদের ফ্লাইট মিস করার ঘটনাও আছে। বাণিজ্যিক রাজধানীর এ মূল সড়কটির কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয় দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের। ক্ষুণœ হয় দেশের ভাবমূর্তি। কিন্তু এখন পতেঙ্গা থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত তৈরি হচ্ছে চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এটি নির্মাণ হলে মাত্র ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে পৌঁছা যাবে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর। কমবে যানজট, কমবে ভোগান্তি। আকৃষ্ট হবেন দেশি-বিদেশি নতুন বিনিয়োগকারীরা। বাড়বে অর্থনৈতিক গুরুত্ব। বিকশিত হবে পর্যটন খাত। বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে যোগাযোগ ব্যবস্থায়। সংযুক্ত হবে দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু টানেলের সঙ্গে। যানজট মুক্ত হবে বিমানযাত্রীদের যাতায়াতের পথ। সঙ্গে ভোগান্তি নিরসন হবে কালুরঘাট-পতেঙ্গা পর্যন্ত মূল সড়কে যাতায়াতকারীদের। চউক সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকার এই প্রকল্প অনুমোদন পায়। ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক্সপ্রেসওয়ের পিলার পাইলিং কাজের উদ্বোধন করেন। সাড়ে ১৬ কিলোমিটারের এই এক্সপ্রেসওয়ে লালখান বাজার থেকে দেওয়ানহাট, দেওয়ানহাট থেকে বারিক বিল্ডিং মোড়, বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে সল্টগোলা ক্রসিং, সল্টগোলা থেকে সিমেন্ট ক্রসিং, সিমেন্ট ক্রসিং থেকে কাঠগড়, কাঠগড় থেকে ভিআইপি রোড এবং সি-বিচ থেকে ভিআইপি রোড পর্যন্ত ভাগ করে কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পুরো এক্সপ্রেসওয়ের নয়টি এলাকায় গাড়ি ওঠা-নামার জন্য ২৪টি র‌্যাম্প থাকবে। এর মধ্যে টাইগারপাস এলাকায় চারটি, আগ্রাবাদে চারটি, বারিক বিল্ডিং মোড়ে দুটি, নিমতলী মোড়ে দুটি, কাস্টমস মোড়ে দুটি, সিইপিজেডে চারটি, কেইপিজেডে দুটি, কাঠগড়ে দুটি, পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় থাকবে দুটি র‌্যাম্প। প্রতিটি র‌্যাম্প হবে দুই লেনের এবং একমুখী। এক্সপ্রেসওয়েতে মোট পিলার হবে ৩৯০টি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর