মঙ্গলবার, ১৪ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

আওয়ামী লীগের সভা ঘিরে দফায় দফায় সংঘর্ষ

কুমিল্লা প্রতিনিধি

চৌদ্দগ্রামে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা ঘিরে দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটেছে। এতে উপজেলার মিয়াবাজার হাইওয়ে রেস্তোরাঁর আশপাশ এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী চলা সংঘর্ষ মাঝরাতে পুলিশ নিয়ন্ত্রণে আনে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীর একাংশের দাবি, দলের চেন অব কমান্ড ভেঙে পড়ায় কেউ কাউকে মানছে না। এতে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।

স্থানীয় সূত্রমতে, হাইওয়ে রেস্তোরাঁয় রবিবার সন্ধ্যায় চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি পৌর মেয়র মীর হোসেন মীরু। সভায় অধিকাংশ নেতা একে অন্যের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে থাকেন। বিষয়টি কয়েকবার সভার সভাপতি থামানোর চেষ্টা করলেও উল্টো তাঁকে ধমক দিয়ে থামিয়ে দেওয়া হয়। একপর্যায়ে কালিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান মজুমদার ও সাবেক চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন মজুমদার পরস্পর বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। সে সময় সালাউদ্দিন মজুমদারের ছেলে নেয়ামত উল্লাহ মজুমদার রুমি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানকে চেয়ার ছুড়ে মারেন। তাঁর পাঞ্জাবি ছিঁড়ে ফেলে তাঁকে লাঞ্ছিত করেন। পরে রেস্তোরাঁর নিচে এলে সালাউদ্দিন ও রুমির ওপর হামলা করেন মাহবুবুর রহমানের ভাই ও ভাতিজারা। পরবর্তীতে সালাউদ্দিন ও রুমির লোকজন পাল্টা হামলা করেন। খবর পেয়ে চৌদ্দগ্রাম পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে দুই পক্ষের অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। মাহবুবুর রহমান মজুমদার বলেন, ‘ওরা সন্ত্রাসী। রুমি একজন মাদক ব্যবসায়ী। আপনারা খবর নিলে সব জানতে পারবেন। মুজিব ভাই (স্থানীয় এমপি মুজিবুল হক) দেশে এলে কথা বলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেব।’ নেয়ামত উল্লাহ মজুমদার রুমি বলেন, ‘মাহবুবুর রহমান মজুমদার আমার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেছে। তা আমার হাতে লেগেছে। আমি এখন চিকিৎসা নিচ্ছি। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেব।’ চৌদ্দগ্রাম উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক শাহজালাল মজুমদার ও সাবেক পৌর মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান বলেন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান বাবলুসহ আমরা কয়েকজন শনিবার উপজেলার হিংগুলায় পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিই। এতে ক্ষুব্ধ হন স্থানীয় এমপি মুজিবুল হক মুজিব। আমাদের প্রতিরোধ করতে তাঁর নির্দেশে বর্ধিত সভা ডাকা হয়। সে সভা ঘিরে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। দলের চেন অব কমান্ড ভেঙে পড়েছে। কেউ কাউকে মানে না। এ বিষয়ে ওই দিনের সভার সভাপতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পৌর মেয়র মীর হোসেন মীরুর কাছে জানতে চাইলে তিনি একটি অনুষ্ঠানে আছেন বলে ফোন রেখে দেন। পরে কল করলেও রিসিভ করেননি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রহমত উল্লাহ বাবুল বলেন, ‘সভায় কোনো সমস্যা হয়নি। সালাউদ্দিন ও মাহবুবের এগুলো ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব।’ চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি শুভরঞ্জন চাকমা বলেন, একটু উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করি। কেউ এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। এদিকে মুজিবুল হক মুজিব এমপি দেশের বাইরে থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর