শুক্রবার, ১৯ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা
চমেক প্রিজন্স ওয়ার্ড

উদ্বোধনের পর থেকেই তালা

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

উদ্বোধনের পর থেকেই তালা

কারাবন্দি রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চালু হয় প্রিজন্স সেল ওয়ার্ড। কিন্তু কাগজে কলমে চালু থাকলেও দেড় বছর ধরে তালাবদ্ধ রয়েছে ওয়ার্ডটি। ফলে চমেক হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় বিশেষ ওয়ার্ড অকার্যকর অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এ বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ ও চমেক হাসপাতালের ভিন্ন ভিন্ন মন্তব্য পাওয়া গেছে। চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ‘এখানে চিকিৎসকদের সঙ্গে কারা কর্তৃপক্ষের কোনো দূরত্ব নেই। প্রিজন্স সেল ওয়ার্ডে ভর্তি না করার কারণ- যারা কারাগার থেকে আসেন তাদের দ্রুতই চিকিৎসা দিতে হয়। তাই তাদের সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমনিতেই হাসপাতালে চিকিৎসক ও স্টাফ সংকট। তাই প্রিজন্স ওয়ার্ডের জন্য আলাদা করে চিকিৎসক ও অন্যান্য স্টাফ দেওয়ার সুযোগ নেই।’ চিকিৎসা না দেওয়ার নেপথ্য কারণ নিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দাওয়াত না দেওয়ার অজুহাতে চিকিৎসকরা প্রিজন্স সেল ওয়ার্ডে আসেন না। চিকিৎসাও দেন না। এ বিষয়ে তাদের অসংখ্যবার অনুরোধ করা হয়েছে। লিখিতভাবেও জানানো হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। গত দেড় বছরের অধিক সময় ধরে বন্ধ রয়েছে প্রিজন্স সেল ওয়ার্ড।’

জানা যায়, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাপসাতালে একটি স্বতন্ত্র ইউনিটের প্রয়োজনীয়তার প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ২০ শয্যার প্রিজন সেল ওয়ার্ড চালু করা হয়। এ স্বতন্ত্র সেল চালুর উদ্দেশ্য হলো সব বন্দিকে এক ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া এবং কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা। নানান পরিকল্পনা নিয়ে প্রিজন্স সেল ওয়ার্ড উদ্বোধন হলেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের দাওয়াত নিয়ে দুই পক্ষের রশি টানাটানিতে প্রায় দেড় বছর ধরে তালা ঝুলে রয়েছে প্রিজন্স সেল ওয়ার্ডে। অনুসন্ধান করতে গিয়ে ভিন্ন তথ্যও মিলেছে। চিকিৎসা নিতে আসা বন্দিদের দায়িত্বরত কারারক্ষীদের সঙ্গে থাকে বিশেষ ‘কন্ট্রাক্ট’। এ ব্যবস্থায় দায়িত্বরত কারারক্ষীকে দিতে হয় মোটা অঙ্কের টাকা। বিনিময়ে বন্দি রোগীরা পান অবাধে মোবাইল ফোনে কথা বলা, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা এবং হাঁটাচলার সুযোগ। প্রিজন্স সেল ওয়ার্ড চালু হলে এ অনৈতিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে বন্দিরা। তাই চমেকে দায়িত্বরত কারা-সংশ্লিষ্টরা সেল চালুর কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছে না। এ বিষয়ে কথা হয় চমেক হাসপাতালে দায়িত্বরত এক কারারক্ষীর সঙ্গে। তিনি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘চমেক হাসপাতালে কারাবন্দিদের জন্য প্রায় দেড় বছর আগে প্রিজন্স সেল ওয়ার্ড চালু হলেও এখানে কোনো রোগী ভর্তি করা হয় না। কারণ এ ওয়ার্ডে ভর্তি হলে কোনো চিকিৎসকই রোগী দেখতে আসেন না। তাই প্রিজন্স সেল ওয়ার্ডে ভর্তি না করিয়ে কারাবন্দিদের অন্য ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে প্রিজন্স সেল ওয়ার্ড তালাবন্দি অবস্থায় রয়েছে।’

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর