ফরিদপুরের সদরপুরের ভাসানচর ইউনিয়নের জমাদ্দার ডাঙ্গী এলাকার নির্মাণাধীন একটি ব্রিজের পাশের মাটি ধসে পড়ে তিন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় মাটিচাপা পড়ে আরও চার শ্রমিক আহত হয়। আহতদের ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বেলা ১২টার দিকে।
স্থানীয়রা জানান, সদরপুর-কৃষ্টপুর বাইপাস সড়কের জমাদ্দার ডাঙ্গী এলাকায় একটি বড় ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলছিল। ১০/১২ জন শ্রমিক নির্মাণাধীন ব্রিজের নিচে লোহার রড বাঁধাইয়ের কাজ করছিল। এ সময় হঠাৎ ব্রিজের পাশের মাটির বিশাল একটি অংশ ধসে কর্মরত শ্রমিকদের কয়েকজনের ওপর পড়ে। এতে সাত/আটজন শ্রমিক মাটির নিচে চাপা পড়ে। কয়েক শ্রমিক মাটির নিচ থেকে উঠে আসতে পারলেও তিনজন উঠে আসতে পারেননি। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। নিহত শ্রমিকরা হলেন- হৃদয় (২২), জাভেদ খাঁ (২১) ও জুলহাস মীর (২২)।
খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা লাশগুলো উদ্ধার করে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, স্থানীয় থানার ওসি। স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, নির্মাণাধীন ব্রিজের কাজ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিশাল গর্ত করে ব্রিজের বেজ কাটে। ফলে ব্রিজের আশপাশের বাড়িঘর ঝুঁকির মধ্যে ছিল। বিষয়টি ঠিকাদারকে জানালেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেননি। বর্তমানে একটি একতলা বাড়ি রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। যে কোনো সময় বাড়িটি ধসে যেতে পারে।
দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ঘটনায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দায়ী করে তদন্তের মাধ্যমে বিচার চেয়েছেন বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এদিকে তিন শ্রমিক নিহতের ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান মো. রাসেল। একই সঙ্গে নিহত শ্রমিকদের প্রত্যেক পরিবারকে লাশ দাফনের জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়।
নিহত জাবেদ খাঁ বাগেরহাট জেলার উদয়পুর উত্তরকান্দি গ্রামের আলামিন খাঁর পুত্র, জুলহাস মীর ফরিদপুর জেলার সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের কুজুরদিয়া গ্রামের ইসমাঈল মীরের পুত্র এবং হৃদয় সদর উপজেলার কবিরপুরের বাসিন্দা। এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাউকে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।
সদরপুর-কৃষ্টপুর বাইপাস সড়কের জমাদ্দার ডাঙ্গী এলাকায় এলজিইডির অর্থায়নে ৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ব্রিজটি নির্মাণের দায়িত্ব পান মেসার্স আসিফ ইকবাল কনস্ট্রাকশন।
